মোঃ মাজহারুল পারভেজ

নিয়োগ পেয়ে মোতাকাব্বির আহমেদ গত ২২ অক্টোবর এক চিঠিতে জানান,
আটাবের দায়িত্ব গ্রহণের পর আর্থিক লেনদেনে একাধিক অনিয়মের বিষয় খুঁজে পান প্রশাসক।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ১৬ জুলাই থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত ৯১ জন সদস্যের কাছ থেকে ৪৫ লাখ ৯৬ হাজার ২৫০ টাকা ফ্যাম ট্রিপ’ (ভ্রমণ এজেন্টদের অভিজ্ঞতা বিনিময়মূলক সফর) বাবদ সংগ্রহ করা হয়। অর্থ সংগ্রহের আগে আটাবের ব্যাংক হিসাবে ৪১ লাখ ৩৮ হাজার ৫৬৬ টাকা ছিল। দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে অর্থ ফেরতের আবেদন আসতে থাকে। প্রশাসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৮৪ জন সদস্যকে ফেরত দেওয়ার কথা ছিল ৪১ লাখ ৯২ হাজার ৮৫০ টাকা, যা আটাবের হিসাবে পাওয়া যায়নি। অল্পসংখ্যক সদস্যকেই আংশিক অর্থ ফেরত দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ১০ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট ২০২৫ এর মধ্যে চারটি আলাদা চেকের মাধ্যমে মোট ৪৫ লাখ টাকা ব্যাংক হিসাব থেকে উত্তোলন করা হয়েছে, যা প্রশাসকের ভাষায় আটাবের সংবিধানের ৫৩(ক) ধারা অনুযায়ী অধিকার বহির্ভূত লেনদেনন।
প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণের সময় আটাবের হিসাবে ৩৪ লাখ ৫ হাজার ৭৯৬ টাকা পাওয়া যায়, যা সংগৃহীত অর্থের তুলনায় অনেক কম। ফলে আটাব এখনো অংশগ্রহণকারীদের পাওনা ফেরত দিতে পারছে না। প্রশাসক সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ, সাবেক মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ এবং সাবেক অর্থসচিব শফিক উল্লাহ নান্টুর বরাবর চিঠি প্রেরণ করে। তাদেরকে অবিলম্বে অর্থ ফেরত দিয়ে বিষয়টি সমাধান করার আহ্বান জানানো হয়েছে, অন্যথায় বৈধ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করা হয়। এরপরই ঘটে তুঘুলকি কাণ্ড।
এরপর শুরু হয় নানামুখী চাপ। পরে চাপ সহ্য করতে না পেরে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে গত ২২ অক্টোবর পদত্যাগ করেন উপসচিব মোতাকাব্বির আহমেদ। উপসচিব মোতাকাব্বীর আহমেদকে অব্যাহতি দিয়ে সরকারের যুগ্ম সচিব সাইফ উদ্দিন আহম্মদকে নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আটাবের সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম বলেন,
দায়িত্বের শেষ দিন তিনি একটা বিশেষ উদ্দেশ্যে আমাদের বিতর্কিত করার জন্য চিঠিটি ইস্যু করেছেন। এসব টাকা ব্যয় হয়েছে, কোনো ব্যক্তি নিয়ে যায়নি।
জানা গেছে, অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর সাবেক কমিটি শেল্টার নেয় প্রভাবশালী মহলের। প্রভাবশালী মহলের চাপ সহ্য করতে না পেরেই পরে তিনি পদত্যাগ করেন। তড়িঘড়ি করে এরপর আরেকজন প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি নিখাদ খবরকে বলেন,
দুর্নীতি ও অনিয়ম বের করে থাকলে তিনি খুব ভালো কাজ করেছেন। ভালো কাজ করার পর প্রথমে তাকে তার এ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া, এবং পরে ওএসডি করে তার উপর রীতিমতো অবিচার করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, যারা দুর্নীতিগ্রস্ত তাদেরকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সরকার কেন কাজ করলো? যদিও দুর্নীতি অনিয়ম বের করার জন্য তাকে দায়িত্ব দেয়নি সরকার। তারপরও তার উপর সরকারের যে দায়িত্ব আছে, সেখানে থেকে সে দুর্নীতি, অনিয়ম সহ্য করবে এবং এ বিষয়ে তিনি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না, সেটা হতে পারে না। যদি সরকারের পক্ষ থেকে এমনটি হয়ে থাকে এবং তিনি ভিকটিমাইজড হয়ে থাকেন, তাহলে এটার দায় সরকারকেই নিতে হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন,
এই সরকারের কাছ থেকে এটা প্রত্যাশিত নয়। তারা যদি দুর্নীতি ও অনিয়মকে সুরক্ষা দেয়, তাহলে তারা যে সংস্কারের দায়িত্বটা নিয়েছে, এতে তা সাংঘর্ষিক হয়ে গেল। এই সরকারের আমলে এমনটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
আটাবের সভাপতি ও মহাসচিবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির বিষয়ে অভিযোগ তুলে সংগঠনটির কার্যনির্বাহী সদস্যপদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন নড়িয়া ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের স্বত্বাধিকারী সবুজ মুন্সী। তিনি জানান,
প্রতি মাসে প্রায় ৩ কোটি এবং বছরে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা চাঁদা বাবদ আদায় করা হয়েছে। এই অর্থের কোন হিসাব নেই। এসব অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে আমরা ইতোমধ্যে দুদক এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
আটাব সদস্যদের বিদেশে ফেম ট্রিপের নামে বিভিন্ন সময়ে সায়মন ওভারসিজ ও সায়মন হলিডেজের মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচার করে আসছেন সংগঠনটির সভাপতি ও মহাসচিব। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আটাবের বর্তমান সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ ও মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির বিষয়ে অভিযোগ তুলে ধরেছে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা।
ট্রাভেল এজেন্সির মালিক ইকরামুল হক অভিযোগ করে বলেন,
অনলাইন টিকিট ও হোটেল বুকিং প্রতিষ্ঠান ফ্লাইট এক্সপার্ট প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে হঠাৎ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এর সিইও সালমান দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান এবং পরে হোয়াটসঅ্যাপে এ তথ্য জানান। এই কোম্পানির সঙ্গে আটাব সভাপতি ও মহাসচিব প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।
তিনি আরও বলেন,
পোর্টাল খোলার নামে লাখ লাখ টাকা তুলে আত্মসাৎ করা হয়েছে। আবার কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বিমান টিকিটের দাম এক লাখ পাঁচ হাজার টাকায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। অথচ প্রকৃত ট্রাভেল এজেন্সিগুলো এই সিন্ডিকেটের জোরে ব্যাবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে।
এদিকে আটাবের সভাপতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠার কথা উল্লেখ করে অফিস আদেশে আরও বলা হয়, অনিয়মের অভিযোগে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও মহাসচিবের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে মানববন্ধন পর্যন্ত হয়েছে। আটাব সংস্কার পরিষদ নামের একটি পক্ষ সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনায় প্রশাসক নিয়োগের জন্য আবেদন করে। এই প্রেক্ষিতে, বাণিজ্য সংগঠন আইন, ২০২২-এর ১৭ ধারা মোতাবেক আটাবের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে সরকারের অনুমোদনক্রমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোতাকাব্বীর আহমেদকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে মোতাকাব্বীর আহমেদ ১২০ দিনের মধ্যে আটাবের ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করার কথা ছিল।
মন্ত্রণালয়ের নথি ঘেঁটে জানা যায়, বিষয়টির ওপর আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করার প্রস্তুতি চলছে। তদন্তে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ এবং সাবেক নেতৃবৃন্দের কার্যক্রমে বিশ্বাসভঙ্গ বা দায়িত্ব লঙ্ঘন ঘটেছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের মহাপরিচালক কর্তৃক স্বাক্ষরিত প্রশাসক নিয়োগের অফিস আদেশটি ইমেইলের মাধ্যমে আটাবে পৌঁছায় গত ৪ আগস্ট দুপুর ১টায়। একই দিন দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে, অর্থাৎ ৪১ মিনিট পর ফ্যাসিস্ট পতিত হাসিনার দোসর আটাব কমিটি আটাবের ট্রাস্ট ব্যাংকের কাকরাইল শাখার অ্যাকাউন্ট থেকে ২৫ লাখ টাকা নগদ উত্তোলন করে করে আটাব অফিস তালাবদ্ধ করে চলে যান তারা।
আটাবের এক সদস্য জানান,
প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ পান প্রশাসক উপসচিব মোতাকাব্বির আহমেদ। পরে তাদেরকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়।
আটাবের একাধিক সদস্য জানায়,
আব্দুস সালাম আরেফসহ এই চক্রটি ফ্যাসিট হাসিনার দোসর হলেও এখনো তারা প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন।
অথচ তাদেরকে শেল্টার দিয়ে টিকিয়ে রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করছে এই সরকারে থাকা একটি পক্ষ। তারা আরো জানান,
এই সালাম সভাপতি হয়ে দলবল নিয়ে গোপালগঞ্জে শেখ মুজিবের মাজার জিয়ারত করেছেন। অথচ এখন তাদের বোল পালটে গেছে।

নিয়োগ পেয়ে মোতাকাব্বির আহমেদ গত ২২ অক্টোবর এক চিঠিতে জানান,
আটাবের দায়িত্ব গ্রহণের পর আর্থিক লেনদেনে একাধিক অনিয়মের বিষয় খুঁজে পান প্রশাসক।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ১৬ জুলাই থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত ৯১ জন সদস্যের কাছ থেকে ৪৫ লাখ ৯৬ হাজার ২৫০ টাকা ফ্যাম ট্রিপ’ (ভ্রমণ এজেন্টদের অভিজ্ঞতা বিনিময়মূলক সফর) বাবদ সংগ্রহ করা হয়। অর্থ সংগ্রহের আগে আটাবের ব্যাংক হিসাবে ৪১ লাখ ৩৮ হাজার ৫৬৬ টাকা ছিল। দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে অর্থ ফেরতের আবেদন আসতে থাকে। প্রশাসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৮৪ জন সদস্যকে ফেরত দেওয়ার কথা ছিল ৪১ লাখ ৯২ হাজার ৮৫০ টাকা, যা আটাবের হিসাবে পাওয়া যায়নি। অল্পসংখ্যক সদস্যকেই আংশিক অর্থ ফেরত দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ১০ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট ২০২৫ এর মধ্যে চারটি আলাদা চেকের মাধ্যমে মোট ৪৫ লাখ টাকা ব্যাংক হিসাব থেকে উত্তোলন করা হয়েছে, যা প্রশাসকের ভাষায় আটাবের সংবিধানের ৫৩(ক) ধারা অনুযায়ী অধিকার বহির্ভূত লেনদেনন।
প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণের সময় আটাবের হিসাবে ৩৪ লাখ ৫ হাজার ৭৯৬ টাকা পাওয়া যায়, যা সংগৃহীত অর্থের তুলনায় অনেক কম। ফলে আটাব এখনো অংশগ্রহণকারীদের পাওনা ফেরত দিতে পারছে না। প্রশাসক সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ, সাবেক মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ এবং সাবেক অর্থসচিব শফিক উল্লাহ নান্টুর বরাবর চিঠি প্রেরণ করে। তাদেরকে অবিলম্বে অর্থ ফেরত দিয়ে বিষয়টি সমাধান করার আহ্বান জানানো হয়েছে, অন্যথায় বৈধ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করা হয়। এরপরই ঘটে তুঘুলকি কাণ্ড।
এরপর শুরু হয় নানামুখী চাপ। পরে চাপ সহ্য করতে না পেরে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে গত ২২ অক্টোবর পদত্যাগ করেন উপসচিব মোতাকাব্বির আহমেদ। উপসচিব মোতাকাব্বীর আহমেদকে অব্যাহতি দিয়ে সরকারের যুগ্ম সচিব সাইফ উদ্দিন আহম্মদকে নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আটাবের সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম বলেন,
দায়িত্বের শেষ দিন তিনি একটা বিশেষ উদ্দেশ্যে আমাদের বিতর্কিত করার জন্য চিঠিটি ইস্যু করেছেন। এসব টাকা ব্যয় হয়েছে, কোনো ব্যক্তি নিয়ে যায়নি।
জানা গেছে, অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর সাবেক কমিটি শেল্টার নেয় প্রভাবশালী মহলের। প্রভাবশালী মহলের চাপ সহ্য করতে না পেরেই পরে তিনি পদত্যাগ করেন। তড়িঘড়ি করে এরপর আরেকজন প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি নিখাদ খবরকে বলেন,
দুর্নীতি ও অনিয়ম বের করে থাকলে তিনি খুব ভালো কাজ করেছেন। ভালো কাজ করার পর প্রথমে তাকে তার এ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া, এবং পরে ওএসডি করে তার উপর রীতিমতো অবিচার করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, যারা দুর্নীতিগ্রস্ত তাদেরকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সরকার কেন কাজ করলো? যদিও দুর্নীতি অনিয়ম বের করার জন্য তাকে দায়িত্ব দেয়নি সরকার। তারপরও তার উপর সরকারের যে দায়িত্ব আছে, সেখানে থেকে সে দুর্নীতি, অনিয়ম সহ্য করবে এবং এ বিষয়ে তিনি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না, সেটা হতে পারে না। যদি সরকারের পক্ষ থেকে এমনটি হয়ে থাকে এবং তিনি ভিকটিমাইজড হয়ে থাকেন, তাহলে এটার দায় সরকারকেই নিতে হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন,
এই সরকারের কাছ থেকে এটা প্রত্যাশিত নয়। তারা যদি দুর্নীতি ও অনিয়মকে সুরক্ষা দেয়, তাহলে তারা যে সংস্কারের দায়িত্বটা নিয়েছে, এতে তা সাংঘর্ষিক হয়ে গেল। এই সরকারের আমলে এমনটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
আটাবের সভাপতি ও মহাসচিবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির বিষয়ে অভিযোগ তুলে সংগঠনটির কার্যনির্বাহী সদস্যপদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন নড়িয়া ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের স্বত্বাধিকারী সবুজ মুন্সী। তিনি জানান,
প্রতি মাসে প্রায় ৩ কোটি এবং বছরে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা চাঁদা বাবদ আদায় করা হয়েছে। এই অর্থের কোন হিসাব নেই। এসব অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে আমরা ইতোমধ্যে দুদক এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
আটাব সদস্যদের বিদেশে ফেম ট্রিপের নামে বিভিন্ন সময়ে সায়মন ওভারসিজ ও সায়মন হলিডেজের মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচার করে আসছেন সংগঠনটির সভাপতি ও মহাসচিব। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আটাবের বর্তমান সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ ও মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির বিষয়ে অভিযোগ তুলে ধরেছে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা।
ট্রাভেল এজেন্সির মালিক ইকরামুল হক অভিযোগ করে বলেন,
অনলাইন টিকিট ও হোটেল বুকিং প্রতিষ্ঠান ফ্লাইট এক্সপার্ট প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে হঠাৎ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এর সিইও সালমান দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান এবং পরে হোয়াটসঅ্যাপে এ তথ্য জানান। এই কোম্পানির সঙ্গে আটাব সভাপতি ও মহাসচিব প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।
তিনি আরও বলেন,
পোর্টাল খোলার নামে লাখ লাখ টাকা তুলে আত্মসাৎ করা হয়েছে। আবার কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বিমান টিকিটের দাম এক লাখ পাঁচ হাজার টাকায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। অথচ প্রকৃত ট্রাভেল এজেন্সিগুলো এই সিন্ডিকেটের জোরে ব্যাবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে।
এদিকে আটাবের সভাপতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠার কথা উল্লেখ করে অফিস আদেশে আরও বলা হয়, অনিয়মের অভিযোগে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও মহাসচিবের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে মানববন্ধন পর্যন্ত হয়েছে। আটাব সংস্কার পরিষদ নামের একটি পক্ষ সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনায় প্রশাসক নিয়োগের জন্য আবেদন করে। এই প্রেক্ষিতে, বাণিজ্য সংগঠন আইন, ২০২২-এর ১৭ ধারা মোতাবেক আটাবের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে সরকারের অনুমোদনক্রমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোতাকাব্বীর আহমেদকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে মোতাকাব্বীর আহমেদ ১২০ দিনের মধ্যে আটাবের ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করার কথা ছিল।
মন্ত্রণালয়ের নথি ঘেঁটে জানা যায়, বিষয়টির ওপর আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করার প্রস্তুতি চলছে। তদন্তে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ এবং সাবেক নেতৃবৃন্দের কার্যক্রমে বিশ্বাসভঙ্গ বা দায়িত্ব লঙ্ঘন ঘটেছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের মহাপরিচালক কর্তৃক স্বাক্ষরিত প্রশাসক নিয়োগের অফিস আদেশটি ইমেইলের মাধ্যমে আটাবে পৌঁছায় গত ৪ আগস্ট দুপুর ১টায়। একই দিন দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে, অর্থাৎ ৪১ মিনিট পর ফ্যাসিস্ট পতিত হাসিনার দোসর আটাব কমিটি আটাবের ট্রাস্ট ব্যাংকের কাকরাইল শাখার অ্যাকাউন্ট থেকে ২৫ লাখ টাকা নগদ উত্তোলন করে করে আটাব অফিস তালাবদ্ধ করে চলে যান তারা।
আটাবের এক সদস্য জানান,
প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ পান প্রশাসক উপসচিব মোতাকাব্বির আহমেদ। পরে তাদেরকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়।
আটাবের একাধিক সদস্য জানায়,
আব্দুস সালাম আরেফসহ এই চক্রটি ফ্যাসিট হাসিনার দোসর হলেও এখনো তারা প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন।
অথচ তাদেরকে শেল্টার দিয়ে টিকিয়ে রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করছে এই সরকারে থাকা একটি পক্ষ। তারা আরো জানান,
এই সালাম সভাপতি হয়ে দলবল নিয়ে গোপালগঞ্জে শেখ মুজিবের মাজার জিয়ারত করেছেন। অথচ এখন তাদের বোল পালটে গেছে।

পরিবারের শিশুদের ঝগড়া থেকে শুরু হয় অভিভাবকদের সংঘর্ষ, একপর্যায়ে বড় ভাই গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ছোট ভাইকে
১৯ ঘণ্টা আগে
আলু রপ্তানির নামে সরকারের নগদ প্রণোদনা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর কৌশল উদঘাটন করেছে দুদক
১৯ ঘণ্টা আগে
২০ বছর আগে হোরা মিয়া ও শাকিলের বাবা আবু তাহের তার ভাই আব্দুল আউয়ালের কাছ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা ধার নিয়েছিলেন
২১ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রামের রাউজানে র্যাবের অভিযানে এক বিএনপি নেতার বাড়ি থেকে বন্দুকসহ বড় পরিমাণ ধারালো অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে
৩ দিন আগেঅ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) এর অনিয়ম ও দুর্নীতি বের করে পুরস্কার হিসেবে ওএসডি হয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোতাকাব্বরি আহমেদ। গত ৩০ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে চিঠি দিয়েছে।
পরিবারের শিশুদের ঝগড়া থেকে শুরু হয় অভিভাবকদের সংঘর্ষ, একপর্যায়ে বড় ভাই গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ছোট ভাইকে
আলু রপ্তানির নামে সরকারের নগদ প্রণোদনা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর কৌশল উদঘাটন করেছে দুদক
২০ বছর আগে হোরা মিয়া ও শাকিলের বাবা আবু তাহের তার ভাই আব্দুল আউয়ালের কাছ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা ধার নিয়েছিলেন