পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বাচ্চাদের লেখাপড়ায় পর্যাপ্ত সময় ও সহায়তা দিলে তারা অনেকদূর এগোবে এবং সঠিকভাবে এগোলে এর ফল দেশের উন্নয়নে পরিণত হবে। রবিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শিক্ষার্থী ও এলাকার সুধীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

৬৩ বছর পর নিজের প্রিয় বিদ্যালয়ে ফিরে এসে তিনি উচ্ছ্বসিত হন এবং ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন। মঞ্চে উপস্থিত তার প্রিয় শিক্ষক জহুরুল ইসলামের প্রতি আবেগ প্রকাশ করেন। তিনি তিন জন গুণী শিক্ষকেরও কথা স্মরণ করেন, যাদের স্বল্প বেতনের মধ্যেও মন দিয়ে পড়ানোর কারণে তিনি আজ এই পর্যায়ে পৌঁছেছেন। তিনি বলেন, লেখাপড়ার বিকল্প নেই। তার বাবা গ্রামে প্রথম গ্রাজুয়েট ছিলেন এবং ভালো ইংরেজী জানতেন, যা তার দক্ষতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করেছে।

তৌহিদ হোসেন বলেন, দেশে গত ৬০ বছরে শিক্ষার ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব পরিবর্তন এসেছে, বিশেষ করে নারী শিক্ষার ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। এখন গ্রামীণ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর অর্ধেকের বেশি নারী। তিনি উল্লেখ করেন, শিক্ষার মান শুধুমাত্র উপস্থিতি দিয়ে নয়, বরং রাষ্ট্রে এর প্রভাবেও পরিমাপ করা হয়। তবে শিক্ষাখাতে বরাদ্দের তুলনায় সন্তোষজনক উন্নতি হয়নি, এবং তিনি মোট বাজেটের ২৫ শতাংশ শিক্ষায় বরাদ্দের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন।

তিনি শিক্ষকদের বেতন ও শিক্ষার গুণগত মানের দিকে গুরুত্বারোপ করেন। অনেক ক্ষেত্রে লেখাপড়া ছাড়াই পাশ হওয়ার প্রবণতা থাকলেও তা কমানো হচ্ছে। শুধুমাত্র অর্থ বরাদ্দ নয়, বরং এর যথাযথ ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জিডিপির ১০ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন। শিক্ষার মান উন্নয়ন না হলে বিদেশে শ্রমিকরা প্রতারিত হয় এবং অন্যান্য দেশের তুলনায় ৭৫ শতাংশ কম বেতন পান। দেশের মানুষকে জনসম্পদে পরিণত করার উপর গুরুত্ব দিতে হবে।

সভায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুস সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান, পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম (পিপিএম), ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তনিমা জামান তন্বী এবং মাগুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান মিঠু।