দুদক চিঠি দিলে বাঁচবে পুরো অর্থ
বিশেষ প্রতিনিধি

এই বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ ওঠার পরে ২০১২ সালে অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন। তবে গত ১২ বছরেরও বেশি সময়েও সেই প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষ করতে পারেনি দুর্নীতি-বিরোধী এই সংস্থাটি। অন্যদিকে একই ব্যক্তি ও কোম্পানির বিরুদ্ধে ৩০০ কোটি টাকারও বেশি ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে দু’টি মামলা দায়ের ও অভিযোগপত্র দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন, যা বিচারাধীন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন,
তাহলে কি আগের মতোই অর্থ লুট না ঠেকিয়ে বরং লুটপাটের পরে মামলা করে লোক দেখানো তৎপরতা দেখাবে দুদক!
ব্যাংক সূত্র বলছে,
ওই টাকা ছাড় করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে মোবাইল ফোনে চাপ প্রয়োগ করেছেন। এরপর সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাখা অফিসকে প্রতিবেদন পাঠাতে বলেছেন। শাখা অফিস বিস্তারিত প্রতিবেদন সদর দপ্তরে জমা দিয়েছে। সেই প্রতিবেদনে কাগজপত্র জালিয়াতির বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি এই অর্থ ছাড় করা হয় তাহলে তা রাষ্ট্রীয় ক্ষতি হবে। এছাড়াও সোনালী ব্যাংকের ফোর্স লোন বৃদ্ধি পাবে। তাই ওই ১৮টি বিলের অর্থ ছাড়ের পাশাপাশি ফোর্স লোনের মামলা দায়েরের অনুমতি চাওয়া হয়।
সেই প্রতিবেদনের একটি কপি সোনালী ব্যাংকের সদর দপ্তর সূত্রে নিখাদ খবরের হাতে এসেছে। সেই প্রস্তাবের উপরেই ৯০৭তম বোর্ড সভায় আলোচনায় অ্যাজেন্ডা ছিলো। বিষয়টি নিয়ে বিস্তর আলোচনাও হয়। যেকোন মুহূর্তে এই অর্থ ছাড় করা হতে পারে বলে জানা গেছে ব্যাংক সূত্রে।
১৩ পাতার ওই প্রতিবেদনে ২ নম্বর মূল পয়েন্টে “শাখা কর্তৃক সংশ্লিষ্ট ১৮টি বিল পরিশোধে প্রতিবন্ধকতা” শিরোনামে ৪টি পয়েন্টে বিল পরিশোধ না করার ৭টি কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকের তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের নির্দেশনায় তৎকালীন ডিএমডি খন্দকার মো. ইকবালের নেতৃত্বাধীন গঠিত ১২ সদস্য বিশেষ পরিদর্শন কমিটি কর্তৃক বিলসমূহ যাচাই-বাছাই করে নিম্নোক্ত উল্লেখযোগ্য অনিয়মগুলো খুঁজে পায়।
মাস্টার এলসি নেই: বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘গাইডলাইন ফর ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রান্সজেকশনের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি স্থাপন করতে হলে ভ্যালিড মাস্টার এলসি থাকা আবশ্যক। রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড-এর কথিত ১৮টি বিটিবি এলসিতে যে ৫টি মাস্টার এলসি/কনট্রাক্ট নম্বর দেখানো হয়েছে, বাস্তবে তার কোনো অস্তিত্ব নেই।
বিদেশে কোনো পণ্য রপ্তানি হয়নি: বিধি মোতাবেক মাস্টার এলসির বিপরীতে বিদেশে রপ্তানীকৃত পণ্যের প্রত্যবসিত রপ্তানি আয় থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির বিল মূল্য ম্যাচিউরিটি তারিখে পরিশোধ করা হয়। রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কর্তৃক মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে উপস্থাপিত ১৮টি বিলে উল্লিখিত মাস্টার এলসি/কনট্রাক্টসমূহের বিপরীতে টি অ্যান্ড ব্রাদার্স নিট কম্পোজিট লিমিটেড ও ড্রেস মি ফ্যাশন লিমিটেড কর্তৃক বিদেশে পণ্য রপ্তানির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
মাস্টার এলসিসমূহের বিপরীতে কোনো ফরেন কারেন্সি প্রত্যবসিত হয়নি: ১৮টি বিলে উল্লিখিত মাস্টার এলসিসমূহের সত্যতা না থাকায় এবং বিদেশে কোনো পণ্য রপ্তানি না হওয়ায় উক্ত এলসিসমূহের বিপরীতে কোনো ফরেন কারেন্সি প্রত্যবসিত হয়নি।
জাল-জালিয়াতির সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে: এই প্যারায় চারটি সুপারিশ করেছে পরিদর্শন কমিটি। সেখানে প্রথমে বলা হয়েছে, ১৮টি বিটিবি এলসির মধ্যে ৪টি এলসি যথা : ০৩৭০১১০৪৩৩৫৬, ০৩৭০১১০৪৩৩৫৫, ০৩৭০১১০৪৩৩৫৬ ও ০৩৭০১১০৪৩৩৫৭— সাপ্তাহিক ছুটির দিন (২.১২.২০১১) তারিখ হয়েছে মর্মে দেখানো হয়েছে, যা অবাস্তব ও জাল-জালিয়াতির প্রমাণ। তাছাড়া, বিলের সাথে উপস্থাপিত ট্রাক চালানসমূহে ট্রাক নং ঢাকা মেট্রো-ম : ৫১-৩১৮১ উল্লেখ রয়েছে। বিআরটিএ কর্তৃক রেজিস্ট্রেশনের তথ্য মোতাবেক উক্ত ট্রাকের পরিবহন/ধারণক্ষমতা ৯৭৫ কেজি। অথচ ১৮টি বিলের প্রতিটির বিপরীতে উক্ত ট্রাকে সরবরাহ/পরিবহন দেখানো পণ্যের ওজন/পরিমাণ অনেক গুণ বেশি, যা বাস্তবিক নয়। তৃতীয় পয়েন্টে বলা হয়েছে, এ শাখায় সুইফট সুবিধা থাকলেও ১৮টি এলসির সবকটিই ম্যানুয়ালি স্থাপিত। বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইনস ফর ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রান্সজেকশন (জিএফইটি) এ বলা হয়েছে, ৫ হাজার মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ মূল্যের এলসি অবশ্যই SWIFT বা অনুরূপ কোনো নিরাপদ মাধ্যমে অ্যাডভাইজিং ব্যাংকে পাঠাতে হবে। এখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্ণিত নির্দেশনা পরিপালন করা হয়নি। সবশেষে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের— গাইডলাইনস ফর ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রানজেকশন (জিএফইটি) এ বলা হয়েছে, Inland back to back LCs denominated in foreign exchange may be opened in favour of local manufacturer-cum-suppliers of inputs. GFET-এর উপর্যুক্ত নির্দেশনার প্রেক্ষিতে পিটিশনার প্রকৃত manufacturer-cum-supplier কি না সে বিষয়টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ ব্যাংকের পরিদর্শক দল কর্তৃক সরেজমিন উক্ত সরবরাহকারীর ফ্যাক্টরি/কারখানা পরিদর্শনপূর্বক রিপোর্ট দাখিল করা হয়েছে, যার প্রাসঙ্গিক অংশ নিম্নরূপ : ‘পরিদর্শনকালে কারখানায় কোনো সাইনবোর্ড দেখা যায়নি। কারখানা চালু থাকলেও কারখানার অবকাঠামোগত সুবিধাদি এবং বিদ্যমান মেশিনারিজের উৎপাদন সক্ষমতা বিবেচনায় সরবরাহকৃত পণ্যের পরিমাণ অত্যধিক বলে প্রতীয়মান হয়েছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ উঠলে ২০১২ সালের ১৫ জুলাই অভিযোগটি অনুসন্ধানের জন্য ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। তবে কমিটি গঠন করা হলেও অদৃশ্য কারণে দুদকের অনুসন্ধান আর এগোয়নি। ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর দুদকের উপপরিচালক মোসা. মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘মেসার্স রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ১৮টি বিলের বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক লিমিটেড, কাওরান বাজার করপোরেট শাখা, ঢাকা ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, নীলকুঠি শাখা, ঢাকার যথাক্রমে ১৭টি ও ১টিসহ মোট ১৮টি বিলের বিষয়ে অনুসন্ধান দল কর্তৃক সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হতে পরিদর্শন প্রতিবেদনসহ অন্যান্য রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে, যার অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান বলে উল্লেখ আছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, কাওরান বাজার শাখার গ্রাহক মেসার্স রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে অপর পৃথক অভিযোগ সংক্রান্তে ৪৯.৩৮ কোটি টাকা ও ২৬০.১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক বিগত ০৪/০৮/২০১৭ তারিখে যথাক্রমে তেজগাঁও (ডিএমপি) থানার মামলা নং-৫ ও ৬ দায়ের করা হয়। উক্ত মামলার তদন্ত শেষে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে, যা আদালতে বিচারাধীন।
ক্ষমতার পটপরিবর্তনে ওই চক্রটি ফের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা শুরু করে। এমতাবস্থায় সোনালী ব্যাংক থেকে চিঠি দিয়ে দুদকের কাছে অনুসন্ধানের সবশেষ অবস্থা জানতে চাওয়া হয়। এরপর চলতি বছরের ২৫ জুন দুদকের উপপরিচালক (বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত : ৩) মো. জাকারিয়া একটি চিঠি দিয়ে সোনালী ব্যাংককে জানায়, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল শাখার হলমার্ক গ্রুপসহ ৬টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ইস্যুকৃত ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির বিপরীতে প্রদত্ত এক্সেপটেন্স তথা নন-ফান্ডেড দায়সংক্রান্ত অভিযোগটি বর্তমানে অনুসন্ধানাধীন রয়েছে।
এসব বিষয়ে মোঃ হযরত আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, সবই ভুয়া। পরে অবশ্য রিপোর্ট না করতে বারবার অনুরোধ করেন।

এই বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ ওঠার পরে ২০১২ সালে অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন। তবে গত ১২ বছরেরও বেশি সময়েও সেই প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষ করতে পারেনি দুর্নীতি-বিরোধী এই সংস্থাটি। অন্যদিকে একই ব্যক্তি ও কোম্পানির বিরুদ্ধে ৩০০ কোটি টাকারও বেশি ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে দু’টি মামলা দায়ের ও অভিযোগপত্র দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন, যা বিচারাধীন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন,
তাহলে কি আগের মতোই অর্থ লুট না ঠেকিয়ে বরং লুটপাটের পরে মামলা করে লোক দেখানো তৎপরতা দেখাবে দুদক!
ব্যাংক সূত্র বলছে,
ওই টাকা ছাড় করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে মোবাইল ফোনে চাপ প্রয়োগ করেছেন। এরপর সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাখা অফিসকে প্রতিবেদন পাঠাতে বলেছেন। শাখা অফিস বিস্তারিত প্রতিবেদন সদর দপ্তরে জমা দিয়েছে। সেই প্রতিবেদনে কাগজপত্র জালিয়াতির বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি এই অর্থ ছাড় করা হয় তাহলে তা রাষ্ট্রীয় ক্ষতি হবে। এছাড়াও সোনালী ব্যাংকের ফোর্স লোন বৃদ্ধি পাবে। তাই ওই ১৮টি বিলের অর্থ ছাড়ের পাশাপাশি ফোর্স লোনের মামলা দায়েরের অনুমতি চাওয়া হয়।
সেই প্রতিবেদনের একটি কপি সোনালী ব্যাংকের সদর দপ্তর সূত্রে নিখাদ খবরের হাতে এসেছে। সেই প্রস্তাবের উপরেই ৯০৭তম বোর্ড সভায় আলোচনায় অ্যাজেন্ডা ছিলো। বিষয়টি নিয়ে বিস্তর আলোচনাও হয়। যেকোন মুহূর্তে এই অর্থ ছাড় করা হতে পারে বলে জানা গেছে ব্যাংক সূত্রে।
১৩ পাতার ওই প্রতিবেদনে ২ নম্বর মূল পয়েন্টে “শাখা কর্তৃক সংশ্লিষ্ট ১৮টি বিল পরিশোধে প্রতিবন্ধকতা” শিরোনামে ৪টি পয়েন্টে বিল পরিশোধ না করার ৭টি কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকের তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের নির্দেশনায় তৎকালীন ডিএমডি খন্দকার মো. ইকবালের নেতৃত্বাধীন গঠিত ১২ সদস্য বিশেষ পরিদর্শন কমিটি কর্তৃক বিলসমূহ যাচাই-বাছাই করে নিম্নোক্ত উল্লেখযোগ্য অনিয়মগুলো খুঁজে পায়।
মাস্টার এলসি নেই: বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘গাইডলাইন ফর ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রান্সজেকশনের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি স্থাপন করতে হলে ভ্যালিড মাস্টার এলসি থাকা আবশ্যক। রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড-এর কথিত ১৮টি বিটিবি এলসিতে যে ৫টি মাস্টার এলসি/কনট্রাক্ট নম্বর দেখানো হয়েছে, বাস্তবে তার কোনো অস্তিত্ব নেই।
বিদেশে কোনো পণ্য রপ্তানি হয়নি: বিধি মোতাবেক মাস্টার এলসির বিপরীতে বিদেশে রপ্তানীকৃত পণ্যের প্রত্যবসিত রপ্তানি আয় থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির বিল মূল্য ম্যাচিউরিটি তারিখে পরিশোধ করা হয়। রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কর্তৃক মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে উপস্থাপিত ১৮টি বিলে উল্লিখিত মাস্টার এলসি/কনট্রাক্টসমূহের বিপরীতে টি অ্যান্ড ব্রাদার্স নিট কম্পোজিট লিমিটেড ও ড্রেস মি ফ্যাশন লিমিটেড কর্তৃক বিদেশে পণ্য রপ্তানির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
মাস্টার এলসিসমূহের বিপরীতে কোনো ফরেন কারেন্সি প্রত্যবসিত হয়নি: ১৮টি বিলে উল্লিখিত মাস্টার এলসিসমূহের সত্যতা না থাকায় এবং বিদেশে কোনো পণ্য রপ্তানি না হওয়ায় উক্ত এলসিসমূহের বিপরীতে কোনো ফরেন কারেন্সি প্রত্যবসিত হয়নি।
জাল-জালিয়াতির সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে: এই প্যারায় চারটি সুপারিশ করেছে পরিদর্শন কমিটি। সেখানে প্রথমে বলা হয়েছে, ১৮টি বিটিবি এলসির মধ্যে ৪টি এলসি যথা : ০৩৭০১১০৪৩৩৫৬, ০৩৭০১১০৪৩৩৫৫, ০৩৭০১১০৪৩৩৫৬ ও ০৩৭০১১০৪৩৩৫৭— সাপ্তাহিক ছুটির দিন (২.১২.২০১১) তারিখ হয়েছে মর্মে দেখানো হয়েছে, যা অবাস্তব ও জাল-জালিয়াতির প্রমাণ। তাছাড়া, বিলের সাথে উপস্থাপিত ট্রাক চালানসমূহে ট্রাক নং ঢাকা মেট্রো-ম : ৫১-৩১৮১ উল্লেখ রয়েছে। বিআরটিএ কর্তৃক রেজিস্ট্রেশনের তথ্য মোতাবেক উক্ত ট্রাকের পরিবহন/ধারণক্ষমতা ৯৭৫ কেজি। অথচ ১৮টি বিলের প্রতিটির বিপরীতে উক্ত ট্রাকে সরবরাহ/পরিবহন দেখানো পণ্যের ওজন/পরিমাণ অনেক গুণ বেশি, যা বাস্তবিক নয়। তৃতীয় পয়েন্টে বলা হয়েছে, এ শাখায় সুইফট সুবিধা থাকলেও ১৮টি এলসির সবকটিই ম্যানুয়ালি স্থাপিত। বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইনস ফর ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রান্সজেকশন (জিএফইটি) এ বলা হয়েছে, ৫ হাজার মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ মূল্যের এলসি অবশ্যই SWIFT বা অনুরূপ কোনো নিরাপদ মাধ্যমে অ্যাডভাইজিং ব্যাংকে পাঠাতে হবে। এখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্ণিত নির্দেশনা পরিপালন করা হয়নি। সবশেষে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের— গাইডলাইনস ফর ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রানজেকশন (জিএফইটি) এ বলা হয়েছে, Inland back to back LCs denominated in foreign exchange may be opened in favour of local manufacturer-cum-suppliers of inputs. GFET-এর উপর্যুক্ত নির্দেশনার প্রেক্ষিতে পিটিশনার প্রকৃত manufacturer-cum-supplier কি না সে বিষয়টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ ব্যাংকের পরিদর্শক দল কর্তৃক সরেজমিন উক্ত সরবরাহকারীর ফ্যাক্টরি/কারখানা পরিদর্শনপূর্বক রিপোর্ট দাখিল করা হয়েছে, যার প্রাসঙ্গিক অংশ নিম্নরূপ : ‘পরিদর্শনকালে কারখানায় কোনো সাইনবোর্ড দেখা যায়নি। কারখানা চালু থাকলেও কারখানার অবকাঠামোগত সুবিধাদি এবং বিদ্যমান মেশিনারিজের উৎপাদন সক্ষমতা বিবেচনায় সরবরাহকৃত পণ্যের পরিমাণ অত্যধিক বলে প্রতীয়মান হয়েছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ উঠলে ২০১২ সালের ১৫ জুলাই অভিযোগটি অনুসন্ধানের জন্য ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। তবে কমিটি গঠন করা হলেও অদৃশ্য কারণে দুদকের অনুসন্ধান আর এগোয়নি। ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর দুদকের উপপরিচালক মোসা. মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘মেসার্স রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ১৮টি বিলের বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক লিমিটেড, কাওরান বাজার করপোরেট শাখা, ঢাকা ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, নীলকুঠি শাখা, ঢাকার যথাক্রমে ১৭টি ও ১টিসহ মোট ১৮টি বিলের বিষয়ে অনুসন্ধান দল কর্তৃক সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হতে পরিদর্শন প্রতিবেদনসহ অন্যান্য রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে, যার অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান বলে উল্লেখ আছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, কাওরান বাজার শাখার গ্রাহক মেসার্স রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে অপর পৃথক অভিযোগ সংক্রান্তে ৪৯.৩৮ কোটি টাকা ও ২৬০.১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক বিগত ০৪/০৮/২০১৭ তারিখে যথাক্রমে তেজগাঁও (ডিএমপি) থানার মামলা নং-৫ ও ৬ দায়ের করা হয়। উক্ত মামলার তদন্ত শেষে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে, যা আদালতে বিচারাধীন।
ক্ষমতার পটপরিবর্তনে ওই চক্রটি ফের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা শুরু করে। এমতাবস্থায় সোনালী ব্যাংক থেকে চিঠি দিয়ে দুদকের কাছে অনুসন্ধানের সবশেষ অবস্থা জানতে চাওয়া হয়। এরপর চলতি বছরের ২৫ জুন দুদকের উপপরিচালক (বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত : ৩) মো. জাকারিয়া একটি চিঠি দিয়ে সোনালী ব্যাংককে জানায়, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল শাখার হলমার্ক গ্রুপসহ ৬টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ইস্যুকৃত ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির বিপরীতে প্রদত্ত এক্সেপটেন্স তথা নন-ফান্ডেড দায়সংক্রান্ত অভিযোগটি বর্তমানে অনুসন্ধানাধীন রয়েছে।
এসব বিষয়ে মোঃ হযরত আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, সবই ভুয়া। পরে অবশ্য রিপোর্ট না করতে বারবার অনুরোধ করেন।

দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয়তাবাদ, ভোট ও নারীর অধিকার, সাম্য ও ন্যায্যতার জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন অকাতরে। মিথ্যে মামলার জালে চার দেয়ালের মাঝে কাটিয়েছেন বছরের পর বছর।
৪ দিন আগে
শেরপুরের রোজবার্গের মালিক হযরত আলীর এলসির কাগজপত্রে জাল-জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে শুরুতেই। পরে সোনালী ব্যাংক পুরো অর্থ আটকে দেয়। খবর পেয়ে তৎপর হয় দুর্নীতি দমন কমিশন। অর্থ আটকে দেওয়ার পরে রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে একটি রিট পিটিশন দায়ের করা হয়।
৭ দিন আগে
কেয়ারটেকার থেকে হয়েছেন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) এর প্রভাবশালী ঠিকাদার। নিয়মকে অনিয়মে পরিণত করে শত শত কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন ঠিকাদার ইয়াছির আরাফাত। ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বিসিকে তার যে দাপট ছিল, এখনো চলছে তাঁর সেই একচেটিয়া প্রভাব।
১৮ দিন আগে
অনুমতি না মেলায় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে আসছেন না বিশিষ্ট ইসলামী স্কলার ডা. জাকির নায়েক। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আয়োজক সংস্থা স্পার্ক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এ তথ্য জানায়।
০৬ নভেম্বর ২০২৫দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয়তাবাদ, ভোট ও নারীর অধিকার, সাম্য ও ন্যায্যতার জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন অকাতরে। মিথ্যে মামলার জালে চার দেয়ালের মাঝে কাটিয়েছেন বছরের পর বছর।
শেরপুরের রোজবার্গের মালিক হযরত আলীর এলসির কাগজপত্রে জাল-জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে শুরুতেই। পরে সোনালী ব্যাংক পুরো অর্থ আটকে দেয়। খবর পেয়ে তৎপর হয় দুর্নীতি দমন কমিশন। অর্থ আটকে দেওয়ার পরে রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে একটি রিট পিটিশন দায়ের করা হয়।
গত ১২ বছর আগে খোলা এলসির মূল্য সুদে-আসলে এখন দাঁড়িয়েছে ৩ গুণ বা প্রায় ৩০ লাখ ডলার। জালিয়াত চক্রের প্রভাবে সেই অর্থ এখন ছাড় করতে যাচ্ছে সোনালী ব্যাংক। সমালোচিত ও বহুল বিতর্কিত ওই প্রতিষ্ঠানটি হলো— রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
কেয়ারটেকার থেকে হয়েছেন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) এর প্রভাবশালী ঠিকাদার। নিয়মকে অনিয়মে পরিণত করে শত শত কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন ঠিকাদার ইয়াছির আরাফাত। ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বিসিকে তার যে দাপট ছিল, এখনো চলছে তাঁর সেই একচেটিয়া প্রভাব।