সৌদি আরবে এক ফিটনেস স্টুডিওতে নারীরা আরবি সুরে বেলি ড্যান্স অনুশীলন করছেন, যা এখনও সমাজে গোপনীয়তা ও সংশয়ের বিষয়।

অংশগ্রহণকারীরা নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে বা মুখ দেখাতে অনিচ্ছুক, যা প্রাচীন নৃত্যশৈলীকে ঘিরে দেশের রক্ষণশীল সামাজিক মনোভাবকে প্রতিফলিত করে।

আরব সংস্কৃতিতে বেলি ড্যান্স একসময় শিল্পচর্চা ও বিনোদনের অংশ ছিল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নারীরা এটি শরীরচর্চা ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির উপায় হিসেবে গ্রহণ করেছেন। কিন্তু সৌদি আরবে এটি এখনো ট্যাবু, এমনকি নারীদের জন্য নির্ধারিত বন্ধ দরজার ভেতরেও বিতর্কের বিষয়। এক অংশগ্রহণকারী বলেন, “অনেকেই বেলি ড্যান্সকে যৌনতার সঙ্গে যুক্ত করে দেখে।”

রিয়াদে সাংবাদিকদের ক্লাসে প্রবেশাধিকার পেতে মাসের পর মাস সময় লেগেছে। অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছেন, পরিবার বা বন্ধুরা জানতে পারলে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। তাই ছবি বা ভিডিও সংরক্ষণে কঠোর নিয়ন্ত্রণ থাকে।

সৌদি আরবের সামাজিক সংস্কার কিছুটা উদার হয়েছে—নারীরা গাড়ি চালাতে পারে, পর্দা শিথিল হয়েছে—তবু সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় রক্ষণশীলতা এখনো বিদ্যমান। বেলি ড্যান্সকে কেউ কেউ এখনও ‘অতি ইঙ্গিতপূর্ণ’ মনে করেন।

ক্লাসে অংশগ্রহণকারীরা বলছেন, নাচ শুধুমাত্র শরীরচর্চা এবং মানসিক প্রশান্তির জন্য। প্রশিক্ষকরা নিজেদের ‘নৃত্যশিল্পী’ নয়, ‘কোচ’ হিসেবে পরিচয় দেন। তারা নাচকে এক ধরনের খেলাধুলা হিসেবে দেখেন।

নারীরা আরবি সুরে তাল মিলিয়ে নাচের মাধ্যমে আনন্দ, চাপমুক্তি ও আত্মবিশ্বাস অর্জন করছেন। রিয়াদে যোগব্যায়াম, বক্সিং এবং বেলি ড্যান্সের ক্লাস বেড়ে গেছে। জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লিসা আরকেভিচ বলেন, বেলি ড্যান্স স্থানীয় নৃত্যরীতির তুলনায় কিছুটা প্ররোচনামূলক, যা অনেক পরিবারের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।

প্রশিক্ষক ওনি বলেন, ক্লাস কেবল শরীরচর্চা নয়, বরং নারীদের আত্মবিশ্বাস, ঐক্য এবং ক্ষমতায়নের মাধ্যম। “নাচ নারীদের মধ্যে শক্তি ও স্বাধীনতার অনুভূতি জাগিয়ে দেয়,” তিনি যোগ করেন।