রংপুর ব্যুরো
রংপুরের গঙ্গাচড়ার হিন্দু পল্লী যেন এখনো আতঙ্কের প্রাচীরে বন্দি। সময় গড়ালেও থামেনি কান্না, শুকায়নি চোখের জল। গত ২৭ জুলাই এলাকার এক সনাতন ধর্মাবলম্বী যুবকের বিরুদ্ধে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে কটূক্তি করার অভিযোগ তুলে, একদল দুর্বৃত্ত অতর্কিতে হামলা চালায় এই শান্তিপ্রিয় পল্লীতে। লুটপাট-ভাঙচুরের সেই দিনের স্মৃতি আজও জেগে আছে প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মনে।
সেদিন প্রাণ বাঁচাতে কেউ পালিয়ে গেছেন ধানক্ষেতে, কেউ আশ্রয় নিয়েছেন আত্মীয়ের বাড়ি কিংবা আশপাশের গ্রামে। কয়েকদিন পর প্রশাসনের আহ্বানে ও নিরাপত্তার আশ্বাসে তারা ফিরতে শুরু করেছেন নিজ নিজ ঘরে। তবে ঘর বলতে এখন শুধু ভাঙা দেয়াল আর ছিন্ন বিছানা। তবু এই ধ্বংসস্তূপেই তারা গুছিয়ে নিচ্ছেন মাথা গোঁজার ঠাঁই।
পল্লীর বাসিন্দা নদীচন বলেন, "আমরা এই গ্রামে সব ধর্মের মানুষের সঙ্গে মিলেমিশেই ছিলাম। কে কাকে কী বলেছে, জানিও না। কিন্তু যারা আমাদের ঘর ভেঙেছে, তার বিচার চাই। ধর্ম নয়, আমরা মানুষ হয়ে বাঁচতে চাই।"
হামলার সময় যাদের ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়, তারা বলছেন, আতঙ্ক এখনো কাটেনি। কিন্তু তাদের মনোবল হারিয়ে যায়নি। ঘুরে দাঁড়ানোর ইচ্ছা শক্তিই এখন বড় সম্বল।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক দীপা রানী জানান, "ঘটনার দিন বাচ্চাদের নিয়ে পাশের গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিলাম। এখন আবার ফিরে এসেছি। প্রশাসন ত্রাণ দিয়েছে, ঘর মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। তবে আতঙ্ক এখনো বুকের ভেতর জমে আছে।"
গঙাচড়া থানার ওসি আল ইমরান জানিয়েছেন, পুলিশ ইতিমধ্যে ঘটনায় দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। অন্য অভিযুক্তদের ধরতে চলছে শুদ্ধি অভিযান।
গঙাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদ হাসান মৃধা জানিয়েছেন, হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে নেয়া হয়েছে জরুরি উদ্যোগ, দেওয়া হচ্ছে খাদ্য সহায়তা ও নির্মাণসামগ্রী।
রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল জানিয়েছেন, "এই ঘটনার যারা মদদদাতা, তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসন ও সুরক্ষায় সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।"
স্থানীয় মুসলিম নেতারাও বলছেন, এই ধরণের ঘটনাকে কোনো ধর্ম সমর্থন করে না।
স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা সিরাজুল ইসলাম বলেন, "ইসলাম শান্তির ধর্ম। কোনোভাবে এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ধর্মের সম্পর্ক নেই। যারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা মানবতার শত্রু।"
হিন্দু-মুসলমান মিলেই গঙ্গাচড়ার এই পল্লী গড়ে উঠেছিল এক সময়। এখন সেই মিলনের জায়গায় এসেছে সন্দেহ ও নিরাপত্তাহীনতা। তবে অনেকেই আবার সেই হারানো সহাবস্থান ফিরিয়ে আনতে চান।
স্থানীয় যুবক জাহিদ হাসান বলেন, "আমাদের গ্রামের মানুষ আগে পরস্পরের বাড়িতে যেত, একসঙ্গে উৎসব করতাম। এখন আবার সেই সময় ফিরিয়ে আনতে চাই। যারা ঘৃণা ছড়িয়েছে, তারা যেন সফল না হয়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।"
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক সংহতি বজায় রাখতে শুধু প্রশাসনিক ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। দরকার শিক্ষার আলো, ধর্মীয় সহনশীলতা ও মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি।
মানবাধিকারকর্মী রুবিনা আফরোজ জানান, "যে কোনো ধর্মীয় সংখ্যালঘুর ওপর হামলা শুধু ব্যক্তিকে নয়, রাষ্ট্রকেও আঘাত করে। এই ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও সমাজের সর্বস্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি।"
ঘটনার দায়ে অভিযুক্ত যুবক বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তার মোবাইল ও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করা হচ্ছে।
এই ঘটনার অভিঘাত শুধু ঘরবাড়ির ক্ষতি নয়, মানুষের মনে তৈরি করেছে এক গভীর ক্ষত। তবে মানুষের মনেই আবার আছে ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস। গঙ্গাচড়ার হিন্দু পল্লী একদিন নিশ্চয়ই আবার হবে মিলেমিশে শান্তিতে বসবাসের এক নিদর্শন যদি থাকে সহনশীলতা, সহমর্মিতা আর ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা।
রংপুরের গঙ্গাচড়ার হিন্দু পল্লী যেন এখনো আতঙ্কের প্রাচীরে বন্দি। সময় গড়ালেও থামেনি কান্না, শুকায়নি চোখের জল। গত ২৭ জুলাই এলাকার এক সনাতন ধর্মাবলম্বী যুবকের বিরুদ্ধে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে কটূক্তি করার অভিযোগ তুলে, একদল দুর্বৃত্ত অতর্কিতে হামলা চালায় এই শান্তিপ্রিয় পল্লীতে। লুটপাট-ভাঙচুরের সেই দিনের স্মৃতি আজও জেগে আছে প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মনে।
সেদিন প্রাণ বাঁচাতে কেউ পালিয়ে গেছেন ধানক্ষেতে, কেউ আশ্রয় নিয়েছেন আত্মীয়ের বাড়ি কিংবা আশপাশের গ্রামে। কয়েকদিন পর প্রশাসনের আহ্বানে ও নিরাপত্তার আশ্বাসে তারা ফিরতে শুরু করেছেন নিজ নিজ ঘরে। তবে ঘর বলতে এখন শুধু ভাঙা দেয়াল আর ছিন্ন বিছানা। তবু এই ধ্বংসস্তূপেই তারা গুছিয়ে নিচ্ছেন মাথা গোঁজার ঠাঁই।
পল্লীর বাসিন্দা নদীচন বলেন, "আমরা এই গ্রামে সব ধর্মের মানুষের সঙ্গে মিলেমিশেই ছিলাম। কে কাকে কী বলেছে, জানিও না। কিন্তু যারা আমাদের ঘর ভেঙেছে, তার বিচার চাই। ধর্ম নয়, আমরা মানুষ হয়ে বাঁচতে চাই।"
হামলার সময় যাদের ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়, তারা বলছেন, আতঙ্ক এখনো কাটেনি। কিন্তু তাদের মনোবল হারিয়ে যায়নি। ঘুরে দাঁড়ানোর ইচ্ছা শক্তিই এখন বড় সম্বল।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক দীপা রানী জানান, "ঘটনার দিন বাচ্চাদের নিয়ে পাশের গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিলাম। এখন আবার ফিরে এসেছি। প্রশাসন ত্রাণ দিয়েছে, ঘর মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। তবে আতঙ্ক এখনো বুকের ভেতর জমে আছে।"
গঙাচড়া থানার ওসি আল ইমরান জানিয়েছেন, পুলিশ ইতিমধ্যে ঘটনায় দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। অন্য অভিযুক্তদের ধরতে চলছে শুদ্ধি অভিযান।
গঙাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদ হাসান মৃধা জানিয়েছেন, হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে নেয়া হয়েছে জরুরি উদ্যোগ, দেওয়া হচ্ছে খাদ্য সহায়তা ও নির্মাণসামগ্রী।
রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল জানিয়েছেন, "এই ঘটনার যারা মদদদাতা, তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসন ও সুরক্ষায় সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।"
স্থানীয় মুসলিম নেতারাও বলছেন, এই ধরণের ঘটনাকে কোনো ধর্ম সমর্থন করে না।
স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা সিরাজুল ইসলাম বলেন, "ইসলাম শান্তির ধর্ম। কোনোভাবে এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ধর্মের সম্পর্ক নেই। যারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা মানবতার শত্রু।"
হিন্দু-মুসলমান মিলেই গঙ্গাচড়ার এই পল্লী গড়ে উঠেছিল এক সময়। এখন সেই মিলনের জায়গায় এসেছে সন্দেহ ও নিরাপত্তাহীনতা। তবে অনেকেই আবার সেই হারানো সহাবস্থান ফিরিয়ে আনতে চান।
স্থানীয় যুবক জাহিদ হাসান বলেন, "আমাদের গ্রামের মানুষ আগে পরস্পরের বাড়িতে যেত, একসঙ্গে উৎসব করতাম। এখন আবার সেই সময় ফিরিয়ে আনতে চাই। যারা ঘৃণা ছড়িয়েছে, তারা যেন সফল না হয়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।"
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক সংহতি বজায় রাখতে শুধু প্রশাসনিক ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। দরকার শিক্ষার আলো, ধর্মীয় সহনশীলতা ও মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি।
মানবাধিকারকর্মী রুবিনা আফরোজ জানান, "যে কোনো ধর্মীয় সংখ্যালঘুর ওপর হামলা শুধু ব্যক্তিকে নয়, রাষ্ট্রকেও আঘাত করে। এই ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও সমাজের সর্বস্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি।"
ঘটনার দায়ে অভিযুক্ত যুবক বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তার মোবাইল ও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করা হচ্ছে।
এই ঘটনার অভিঘাত শুধু ঘরবাড়ির ক্ষতি নয়, মানুষের মনে তৈরি করেছে এক গভীর ক্ষত। তবে মানুষের মনেই আবার আছে ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস। গঙ্গাচড়ার হিন্দু পল্লী একদিন নিশ্চয়ই আবার হবে মিলেমিশে শান্তিতে বসবাসের এক নিদর্শন যদি থাকে সহনশীলতা, সহমর্মিতা আর ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা।
হরিজন সম্প্রদায়ের পরিবারগুলোর অভিযোগ, দুর্গাপুজোর পর যে কোনো সময় কলোনি থেকে সরে যাওয়ার জন্য মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। কলোনির ভেতর এখন নেই পুজোর আনন্দ
১১ ঘণ্টা আগেএসময় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন ফ্রন্ট, সৈয়দপুর হিন্দু কল্যাণ সমিতির নেতৃবৃন্দ ৯৮ বছরের পুরোনো সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় দুর্গাপূজা মণ্ডপের ইতিহাস তুলে ধরে তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের কাছে জানান
১১ ঘণ্টা আগেঐতিহ্যবাহী বাফলার বিল কচুরিপানায় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়ায় উপজেলা প্রশাসন ও ওয়ার্ড ভিশনের উদ্যোগে কচুরিপানা অপসারণ শুরু করেছে
১১ ঘণ্টা আগেজনসাধারণের চলাচলের রাস্তার জায়গা দখল করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ব্যবসা পরিচালনার অপরাধে খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের দুই ব্যবসায়ীকে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর আওতায় ৪ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়
১২ ঘণ্টা আগেহরিজন সম্প্রদায়ের পরিবারগুলোর অভিযোগ, দুর্গাপুজোর পর যে কোনো সময় কলোনি থেকে সরে যাওয়ার জন্য মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। কলোনির ভেতর এখন নেই পুজোর আনন্দ
এসময় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন ফ্রন্ট, সৈয়দপুর হিন্দু কল্যাণ সমিতির নেতৃবৃন্দ ৯৮ বছরের পুরোনো সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় দুর্গাপূজা মণ্ডপের ইতিহাস তুলে ধরে তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের কাছে জানান
ঐতিহ্যবাহী বাফলার বিল কচুরিপানায় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়ায় উপজেলা প্রশাসন ও ওয়ার্ড ভিশনের উদ্যোগে কচুরিপানা অপসারণ শুরু করেছে
জনসাধারণের চলাচলের রাস্তার জায়গা দখল করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ব্যবসা পরিচালনার অপরাধে খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের দুই ব্যবসায়ীকে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর আওতায় ৪ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়