সাতক্ষীরায় সংবাদ সংগ্রহের সময় হামলার শিকার ২ সাংবাদিক

প্রতিনিধি
সাতক্ষীরা
Thumbnail image
অভিযুক্ত ডাক্তার মো. হাফিজুল্লাহ

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার তথ্য সংগ্রহ করায় সাংবাদিককে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ডাক্তারের বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরা শহরের ট্রমা সেন্টারে ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত ডাক্তার মো. হাফিজুল্লাহ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অর্থপেডিক সার্জারির কনসালটেন্ট এবং সাতক্ষীরা ট্রমা সেন্টারের পরিচালক।

হামলার শিকার সাংবাদিকরা হলেন- মনির ইসলাম মনি, বাংলাদেশ প্রতিদিন ও নিউজ টোয়েন্টিফোর’র সাতক্ষীরা প্রতিনিধি এবং দৈনিক কালবেলার সাংবাদিক গাজী ফরহাদ।

প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুর রহমান কলেজের প্রভাষক আমিনুর রহমান বলেন, হঠাৎ করেই দেখলাম ডাক্তার মোহাম্মদ হাফিজুল্লাহর নেতৃত্বে তার স্টাফদের বলছে ট্রমা সেন্টারের সামনের গেট আটকে দিতে। এরপরেই ডাক্তারের নির্দেশে তার স্টাফরা ফিল্মি স্টাইলে সাংবাদিক মনির ওপর হামলা করে। তথ্য সংগ্রহ করায় ডাক্তারের নেতৃত্বে এমন মারধর মেনে নেওয়া যায় না।

হামলার শিকার সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, ৮ মার্চ রাতে তারাবির নামাজ শেষে ট্রমা সেন্টারে একটি রোগীকে দেখতে যাই। রোগী দেখে বাইরে বের হয়ে দেখি এক মহিলা ভ্যানের ওপরে শুয়ে কাতরাচ্ছে। এ সময় তাদের কাছে জানতে চাইলাম কি হয়েছে? রোগীর স্বজনরা জানান তারা বৃহস্পতিবার থেকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিল, কিন্তু তিন দিনেও ট্রিটমেন্ট না পেয়ে হাসপাতালের লোকজনের পরামর্শে ট্রমা সেন্টারে এসেছেন।

তিনি বলেন, আমার কাছে সহযোগিতা চেয়ে তারা আকুতি করে। একপর্যায়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থপেডিক সার্জারি বিভাগের প্রধান ডাক্তার প্রবীর কুমারের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলি। এ সময় রোগীর চিকিৎসা না পাওয়াসহ হাসপাতালের লোকজনের পরামর্শে রোগী বাইরে পাঠানোর বিষয়টি তাকে জানাই। প্রবীর কুমার আমাকে বলেন, এর আগেও ডাক্তার হাফিজুল্লাহর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আসায় তাকে সতর্ক করা হয়েছে। তিনি ভুক্তভোগী রোগীদের পুনরায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন এবং রোগীর স্বজনদের সাথে কথা বলেন। এ সময় হঠাৎ হাফিজুল্লাহসহ ও তার ক্লিনিকের লোকজন আমার ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। উপস্থিত দৈনিক কালবেলার সাংবাদিক গাজী ফরহাদসহ অন্যান্য সাংবাদিক সহকর্মীরা ঠেকাতে গেলে তাদের ওপরও হামলা করে।

ভুক্তভোগী সদর উপজেলার ভালুকা চাঁদপুর এলাকার জুলেখা বেগমের ছেলে ইশার আলী গাজী জানান, আমার আম্মা কয়েক দিন ধরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। তবে কোনো চিকিৎসা পাচ্ছিলাম না। আজ হাসপাতালে লোকজন বলে- চিকিৎসা পেতে হলে ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যেতে। তাই মাকে ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যাই।

তিনি বলেন, ট্রমা সেন্টারের সামনে আসার পরে মায়ের কান্নাকাটি দেখে সাংবাদিক ভাই এগিয়ে আসে। পরে সব ঘটনা বললে তিনি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বড় ডাক্তারের কাছে কল দেয়। বড় ডাক্তার তার মোবাইল থেকে আমাদের সাথে কথা বলে পুনরায় মেডিকেলে নিয়ে যেতে বলে। আমরা সে জন্যই প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে ট্রমা সেন্টারের ডাক্তার ও তার লোকজন সাংবাদিক ভাইয়ের ওপর আক্রমণ করে। তারা ট্রমা সেন্টারের সামনের গেট বন্ধ করে সাংবাদিকদের বেধড়ক মারধর করে।

সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি শামিনুল হক বলেন, খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ভুক্তভোগী সাংবাদিককে উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

অপরাধ নিয়ে আরও পড়ুন

মঙ্গলবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে নিজ বাসভবন থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে তাকে বিস্ফোরক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

৭ ঘণ্টা আগে

বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের হেনস্তার প্রতিবাদে এবং প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের অযৌক্তিক তিন দফা দাবির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও ব্লকেড কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

৭ ঘণ্টা আগে

সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার তলুইগাছা সীমান্তের জিরো পয়েন্টে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের ফেরত দেওয়া হয়।

৮ ঘণ্টা আগে

খাদ্যের কথা ভাবলে পুষ্টির কথা ভাবুন’এ স্লোগান সামনে রেখে এবং অপুষ্টিজনিত রোগ-ব্যাধি থেকে প্রজন্মকে রক্ষা এবং সুস্থ ও মেধাসম্পন্ন জাতি গঠনের লক্ষ্যে গঠিত জামালপুর সদর উপজেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়

৯ ঘণ্টা আগে