দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা। মোরেলগঞ্জ ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি ও সুন্দরবন সাব সেক্টর মুজিব বাহিনীর প্রধান ডা. মোসলেম উদ্দিনের নেতৃত্বে ১১ জনের একটি দল মোরেলগঞ্জকে প্রথম দফায় হানাদার মুক্ত করে।

মুক্তিকামী দলে ছিলেন নীল রতন মিস্ত্রী, এম.কে. আজিজ, কচুবুনিয়ার সুলতান আহমেদ, চিংড়াখালীর আ. রশিদ বক্স, শরণখোলার খায়রুল আলম, অমূল্য কুমার রায়, ভাটখালীর আব্দুল খালেক, কাকড়াতলীর চিরানন্দ মন্ডল, জিউধরার আব্দুর রাজ্জাক ও রাজেন মন্ডল।

১২ ডিসেম্বর মংলার বদ্ধমারী ক্যাম্প থেকে মোরেলগঞ্জ মুক্ত করার পরিকল্পনা করা হয়। ১৩ ডিসেম্বর মধ্যরাতে মুক্তিযোদ্ধারা মংলা থেকে মোরেলগঞ্জে পৌঁছে উপজেলা সদরের নব্বইরশি টাউন হাইস্কুল মাঠে অবস্থান নেন। রাতের অন্ধকারে বাজারের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে রাজাকারদের ক্যাম্পে একযোগে গুলি চালানো হয়। ভয়ভীতি ও তীব্র হামলার ফলে মোরেলগঞ্জের ৬টি রাজাকার ক্যাম্প ত্যাগ করে পালিয়ে যায়। মুক্তিকামী বাহিনী সেই ক্যাম্প দখল করে এবং সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে।

মোরেলগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলম বাবুল বলেন, ১৪ ডিসেম্বর মোরেলগঞ্জকে পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত করা হয়েছিল। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও মুক্তিযোদ্ধারা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা আজও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। মোরেলগঞ্জ পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল মজিদ জব্বার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ছিল সাধারণ মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পাবেন এবং শান্তিতে বসবাস করবেন। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য দেশের সুষ্ঠু, গণতান্ত্রিক পরিবেশ অপরিহার্য।