১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী থেকে মুক্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় কিশোরগঞ্জে পাকিস্তানি সেনারা শক্তিশালী ঘাঁটি স্থাপন করেছিল। ১৪ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের সাতটি কোম্পানি তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে তিন দিক থেকে আক্রমণ চালায়। আক্রমণের পর পাকসেনারা সৈয়দপুর ও রংপুর সেনানিবাসে পালিয়ে যায়। ফলে ১৫ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জ হানাদারমুক্ত হয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান চৌধুরী জানান, কিশোরগঞ্জ হাসপাতালে ও হাইস্কুল সংলগ্ন বিল্ডিংয়ে পাকসেনারা অবস্থান করত। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তারা ক্যাম্প গড়ে সাধারণ মানুষ ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কার্যক্রম চালাত।

মুক্তিযোদ্ধারা ১০ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জে প্রবেশ করে এবং ১২ ডিসেম্বর ভারতীয় বাহিনীর সমর্থন পায়। সাতটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে তারা পাকসেনাদের তাড়া করতে থাকে। এলএমজি, ৩ ইঞ্চি মর্টার ও অন্যান্য আধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করে কিশোরগঞ্জে তুমুল আক্রমণ চালানো হয়। ধাইজান নদীর ধারে এবং কিশোরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের আশপাশে পাকসেনাদের অবস্থান ধ্বংস করা হয়।

কিশোরগঞ্জ যুদ্ধে ৭ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। তাদের মরদেহ হাইস্কুল সংলগ্ন তৎকালীন দরগারপাড়ে সমাহিত করা হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়নি। হানাদারমুক্তির পর আনন্দ মিছিলের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণ বিজয় উদযাপন করে।

১৫ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল দিন হিসেবে স্মরণীয়।