নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের বাইশপুকুর গ্রামে তিস্তা নদীর ভয়াবহ ভাঙন রোধ, স্থায়ী সমাধান এবং তুহিন বাঁধ রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১১ আগস্ট) সকাল ১১টায় তিস্তার তীরে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন।

এলাকাবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ মনোয়ার হোসেন, জামায়াতে ইসলামী ডিমলা উপজেলা শাখার নায়েবে আমির কাজী মাওলানা হাবিবুর রহমান, খালিশা চাপানি ইউপি চেয়ারম্যান সহিদুজ্জামান সরকার, সাবেক চেয়ারম্যান শামসুল হক হুদা, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, ইউনিয়ন যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আব্দুল করিম, জামায়াতে ইসলামী খালিশা চাপানি ৪নং ওয়ার্ডের সভাপতি সেরাজুল ইসলামসহ স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

বক্তারা জানান, তিস্তার ভাঙনে ইতোমধ্যে হাজার হাজার একর ফসলি জমি ও শত শত ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে ভাঙন তুহিন বাঁধের একেবারে কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাইশপুকুর, ছাতুনামা, কেল্লাপাড়া এবং পার্শ্ববর্তী জলঢাকা উপজেলার হলদিবাড়ী ও ডাউবাড়ীসহ একাধিক গ্রামকে হুমকির মুখে ফেলেছে। বাঁধ ভেঙে গেলে আশ্রয়ণ প্রকল্প, বাইশপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ অসংখ্য মসজিদ-মাদ্রাসা, মন্দির ও লক্ষাধিক মানুষের বসতি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।

ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘এক রাতে আমার সব ঘরবাড়ি তিস্তা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন পরিবার নিয়ে বাঁধের উপরেই থাকি। বাঁধও ভেঙে গেলে আমাদের যাওয়ার জায়গা থাকবে না।’

গৃহবধূ রহিমা খাতুন বলেন, ‘আমরা এখানেই জন্মেছি, এখানেই ঘর বেঁধেছি। নদী সব কেড়ে নিচ্ছে। সরকার দ্রুত বাঁধ মেরামত না করলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাব।’

মানববন্ধনে বক্তারা জরুরি ভিত্তিতে জিও টিউব ব্যাগ ও পাথর ফেলে ভাঙন ঠেকানো এবং দীর্ঘমেয়াদি নদী শাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানান। পরে এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।