ফেনীতে নদীভাঙন, ভূমিহীন শত শত পরিবার

প্রতিনিধি
ফেনী
Thumbnail image

ফেনী ও নোয়াখালীর তিনটি উপজেলায় ছোট ফেনী নদীর ভয়াবহ ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। ইতোমধ্যে শত শত বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে ভাঙন পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।

দুই রেগুলেটরের ধ্বংসে বিপর্যয়

১৯৬১ সালে সোনাগাজীর কাজীরহাট এলাকায় নির্মিত রেগুলেটরটি ২০০২ সালে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নদীতে বিলীন হয়। পরে ২০১০ সালে ৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মুছাপুরে আরেকটি রেগুলেটর নির্মিত হয়, যা ২০২৪ সালের ২৬ শে আগস্টে উজানের ঢল এবং প্রবল বর্ষণের ফলে নদীগর্ভে চলে যায়। ফলে নদীর দুই তীরে শুরু হয় ব্যাপক ভাঙন।

ভাঙনের মুখে তিন উপজেলা

ফেনীর সোনাগাজী ও দাগনভূঞা, এবং নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ভাঙন ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু ফেনী জেলাতেই ছোট ফেনী নদীর ১৩ কিলোমিটার অংশ তীব্র ভাঙনের শিকার। নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে বাঁকা হয়ে পড়ায় ভাঙন আরও ত্বরান্বিত হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ও মানুষজন

সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ, চর মজলিশপুর, বগাদানা ইউনিয়নের একাধিক গ্রাম, দাগনভূঞার ভাষাশহিদ সালাম নগর ও কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর, চরপার্বতীসহ বহু এলাকায় ভাঙনের ক্ষতি ভয়াবহ। পাকা-আধাপাকা শত শত বাড়ি ইতোমধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে। স্থানীয়রা ভিটেমাটি হারিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।

চরসাহাভিকারী গ্রামের গৃহবধূ জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, “ঘরের অর্ধেক নদীতে চলে গেছে, বাকি অংশও যে কোনো সময় যাবে।” সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর হারানো হালিমা খাতুনসহ অনেকে এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।

যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, কৃষি ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত

ভাঙনের ফলে কাজীরহাট-বাংলাবাজার সড়কের প্রায় ৫০০ মিটার নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে বাজারের উত্তরাংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কৃষিনির্ভর ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বড় ধরনের সমস্যায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ ও প্রশাসনিক উদাসীনতা

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বাসিন্দাদের অভিযোগ, একাধিকবার পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও এখনো কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কর্মকর্তারা শুধু পরিদর্শনে এসে ফিরে যাচ্ছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বক্তব্য

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আক্তার হোসেন মজুমদার জানান, ফেনীর চারটি উপজেলায় ছোট ফেনী, ফেনী ও কালিদাস পাহালিয়া নদীতে ভাঙন চলছে। ভাঙন রোধে ১৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে বিশ্বব্যাংক অর্থায়িত ‘বিস্ট্রং’ প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হলে ভাঙন পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানান তিনি। তবে মুছাপুর রেগুলেটরের পুনর্নির্মাণ নিয়ে এখনো কোনো সরকারি উদ্যোগ নেই।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

জেলা নিয়ে আরও পড়ুন

লালনসংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে একুশে পদক পান তিনি। ১৯৯৩ সালে চল”িচত্র ‘অন্ধ প্রেম’-এ ব্যবহৃত তাঁর গাওয়া ‘নিন্দার কাঁটা’র জন্য পান জাতীয় চল”িচত্র পুরস্কার। ২০০৮ সালে জাপানের মর্যাদাপূর্ণ ফুকুওয়াকা পুরস্কারে ভূষিত হন। তবে পুরস্কার-সম্মান নয়, তাঁর কাছে আসল অর্জন ছিল মানুষের ভালোবাসা

৭ ঘণ্টা আগে

এনআইসিইউতে ৩টি বেড খালি থাকায় ৩ নবজাতককে রাখা সম্ভব হয়েছে। ২ নবজাতের অবস্থা আশংকাজনক। এখানে বেড খালি হলে বাইরের হাসপাতালে যে নবজাতকদের নিয়ে রাখা হয়েছে তাদেরও এখানে নিয়ে আসা হবে

৭ ঘণ্টা আগে

শহরের যানজট নিরসনে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ, লাইসেন্সবিহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধকরণ, দ্বিধাবিভক্ত প্রেসক্লাব ইস্যুতে আলোচনার উদ্যোগ গ্রহণ, সরকারি খাস জমিতে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছ্বেদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার মান উন্নয়নসহ জনগুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়

৭ ঘণ্টা আগে

পুলিশের একার পক্ষে চুরি, ছিনতাই কিংবা ইভটিজিং বন্ধ করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রত্যেক নাগরিককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সতর্ক থাকতে হবে এবং কোনো অপরাধ চোখে পড়লেই তা সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সর্বদা জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে

৭ ঘণ্টা আগে