ময়মনসিংহে ভেজাল ধান বীজে কৃষকদের সর্বনাশ

প্রতিনিধি
ময়মনসিংহ
Thumbnail image
ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলা সদর ইউনিয়ন ও নড়াইল ইউনিয়নের ৬৫ জন কৃষক চলতি বোরো মৌসুমে পৌর শহরের মেসার্স আব্দুল আউয়াল ট্রেডার্স এর মালিক মো. জাকারিয়া ও কাওয়ালীজান বাদশা বাজার এলাকার ইদ্রিস আলী মুন্সির কীটনাশক দোকান থেকে বীজ কিনে প্রতারিত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আজ রোববার দুপুরে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কৃষকরা।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে সদর ইউনিয়নের কালিয়ানীকান্দা ও নড়াইল ইউনিয়নের পূর্ব কাওয়ালীজান ও পশ্চিম বটগাছিয়াকান্দা গ্রামের ৪১ জন ইদ্রিস আলী মুন্সির কীটনাশক দোকান থেকে মিতালী-৪ জাতের ধান ক্রয় করে ৮০ একর জমিতে রোপন করেন।

পাশাপাশি পূর্ব কাওয়ালীজান এলাকার ১২ জন কৃষক মো. জাকারিয়ার কাছ থেকে একই ধান কিনে ২৪ একর জমিতে বোরো ধান রোপন করেন। পরে কয়েকদিন ধরেই এ সকল জমির রোপনকৃত ধানে চিটা দেখা দেয়। পরে সকল কৃষক খোলা প্যাকেট নিয়ে কৃষি অফিসের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারে ধানগুলো ছিল ত্রুটিযুক্ত। পাশাপাশি কৃষকদের অভিযোগ আসল মিতালী-৪ জাতের বীজ ধান না দিয়ে একই প্যাকেটে অন্যধান দিয়ে ডিলাররা তাদের সাথে প্রতারণা করেছেন। এতে করে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।

কাওয়ালীজান এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক আজিজুল ইসলাম বলেন, আমরা এখন বুঝতে পেরেছে মিতালী-৪ জাতের ধান না দিয়ে মো. জাকারিয়া ও ইদ্রিস আলী মুন্সি কৃষকদের সাথে প্রতারণা করেছেন। আসল জাতের মিতালী জাতের ধানের ফলন খুবই ভালো। যারা আসল মিতালী জাতের ধান রোপন করেছেন তাদের ধান অনেক সুন্দর হয়েছে। কিন্তু আমাদের ধানে সব চিটা দেখা দিয়েছে।

পূর্ব কালিয়ানীকান্দা গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর বলেন, আমরা এই জাতের ধান বীজ প্রতিকেজি ৬৫০ টাকায় ধরে ক্রয় করেছি। মোট ২ একর জমিতে এই ধান রোপন করেছি। এক একর জমিতে মোট খরচ ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু বর্তমানে ভেজাল বীজ ধানে আমার সকল স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে।

একদিকে আমন মৌসুমে বন্যায় ফসল ঘরে উঠাতে পারিনি। অন্যদিকে ভেজাল বীজে ধান না হওয়ায় কিভাবে পরিবার নিয়ে বাঁচবো কিছুই বুঝতে পারছিনা। ডিলাররা আমাদের সর্বনাশ করে দিয়েছে।

কালিয়ানিকান্দা গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, গত বছর মিতালী বীজ লাগিয়ে ভালো ফলন পেয়েছিলাম। তাই এবারো মিতালী জাতের বীজ ক্রয় করেছি। কিন্তু ভেজাল বীজ দিয়ে কৃষকদের পথে বসিয়ে দিয়েছে ডিলাররা। আমরা আমাদের ক্ষতিপূরণ চাই। তা না হলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। পাশাপাশি এসকল ডিলারদের বিরুদ্ধে আইনিভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।

অভিযোগের বিষয়ে কীটনাশক দোকানী ইদ্রিস আলী মুন্সি বলেন, আমি এটির সাব ডিলার। আমি ডিলার জাকারিয়ার দোকান থেকে বীজ এনে কৃষকদের কাছে বিক্রি করেছি। কৃষকদের অভিযোগের বিষয়ে আমি জাকারিয়াকে জানিয়েছি।

জাকারিয়া আব্দুল আউয়াল ট্রেডার্স এর মালিক মো. জাকারিয়া বলেন, আমি কোন ভেজাল বীজ বিক্রি করেনি। এটি ভালো জাতের ধান। আমি নিজেও এই ধান করেছি। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষদের জমিতে ব্লাস্ট রোগ ধরেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

হালুয়াঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, কৃষকরা আমার কাছে এসে অভিযোগ দিয়ে গেছে। আমি বিষয়টি তদন্ত করছি। এ ঘটনায় যারা জড়িত সকলের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

অর্থনীতি নিয়ে আরও পড়ুন

৫ লাখ টন মসুর ডাল ও ৫ লাখ টন চিনি আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে শর্ত হিসেবে আন্তর্জাতিক মান ও বিএসটিআইয়ের নির্ধারিত মান বজায় রাখতে হবে

১৬ ঘণ্টা আগে

জুলাই মাসে বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র এক হাজার ৬৪৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, যা বরাদ্দের মাত্র ০.৬৯ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে বাস্তবায়ন হয়েছিল দুই হাজার ৯২২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বা ১.০৫ শতাংশ। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসের বাস্তবায়ন একক মাস হিসেবে গত এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে

১৮ ঘণ্টা আগে

আগস্টের ১৭ দিনে ১৬১ কোটি ৯০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৪৯ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের (কৃষি ব্যাংক) মাধ্যমে এসেছে ১৫ কোটি ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৯৬ কোটি ২৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এ ছাড়া বিদেশি ব্যাংকে

২ দিন আগে

২০২৪ সালের অক্টোবরে ব্যাংকটি এমডি পদে যোগ দেন শেখ মোহাম্মদ মারুফ। এর আগে তিনি সিটি ব্যাংকের অতিরিক্ত এমডি ছিলেন

২ দিন আগে