ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে প্রধান শিক্ষকের রাজকীয় বিদায়

প্রতিনিধি
পঞ্চগড়
Thumbnail image
ছবি: প্রতিনিধি

শিক্ষকতা শেষে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে অবসরে গেলেন পঞ্চগড়ের প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ বিষ্ণু প্রসাদ (বিপি) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. ছায়ফুল্লাহ। প্রিয় শিক্ষকের বিদায়কে স্মরণীয় করে রাখতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দিয়েছেন রাজকীয় সংবর্ধনা। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিদ্যালয়ের সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষার্থীদের আয়োজনে বিদায় ও সংবর্ধনা শেষে লাল গালিচা মাড়িয়ে হেঁটে চলেন তিনি। এসময় তাঁকে ফুল ছিটিয়ে সম্মান জানানো হয়। পরে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে শহরের পঞ্চগড়-তেতুঁলিয়া মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শহরের কায়েত পাড়া এলাকায় নিজ বাড়িতে পৌঁছান এ শিক্ষক।

এসময় স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ঘোড়ার গাড়ির পেছনে পায়ে হেঁটে শ্রদ্ধা পদযাত্রা করে শিক্ষককে বাড়িতে পৌঁছে দেন।

বিদায় ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মচারী সহ শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, পঞ্চগড় জেলার প্রাচীনতম পঞ্চগড়ের প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ বিষ্ণু প্রসাদ (বিপি) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসের ১৮ তারিখে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন তিনি। এর আগে, ১৯৯১ সালের ২৫শে মে দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (ইসলাম ধর্ম) হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন। এরপর ১৯৯৪ সালে জুলাই মাসে পঞ্চগড় বিষ্ণু প্রসাদ (বিপি) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেন। তারপর ২০১২ সালের ৭ মে পঞ্চগড় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বদলি হন তিনি। অবসর জনিত কারণে ২৯ সেপ্টেম্বর শিক্ষকতা জীবনের সমাপ্ত ঘটে।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিক দেলোয়ার হোসেন, সারের সৎ উপদেশগুলো আমাদের অনেকের জীবনে পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। শিক্ষার মান আমাদের বিদ্যালয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। আমরা আরো কিছুদিন যদি আমরা স্যারকে পেতাম তাহলে আমরা হয়তোবা এই স্কুলটিকে বাংলাদেশের আরো সর্বোচ্চ জায়গায় নিয়ে যেতে পারতাম। তিনি অনেক ভালো ও উদার মনের মানুষ। শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছে বেশ প্রিয় ছিলেন। কখনো রাগ বা ক্ষোভ দেখিনি। পিতার মতো শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছেন। আমার কর্ম জীবনে এমন শিক্ষক পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করছি। তিনি এতো উদার মনের মানুষ, কোনো শিক্ষকের বিপদ হলে সঙ্গে সঙ্গে যেতেন এবং খোঁজ খবর নিতেন। স্যার অবসর জনিত কারণে বিদায় নিয়েছেন। এটি সবাইকে মানতেই হবে। আমরা স্যারের দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করছি।

সদ্য সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. ছায়ফুল্লাহ বলেন, দীর্ঘ ৩৪ বছর শিক্ষকতা শেষে অবসর নিয়েছি। মহান এ পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পেরে আজ আমি সার্থক। আমার শিক্ষকতায় অনেক শিক্ষার্থীদের পেয়েছি। তাদের ভালোবাসা পেয়েছি, তাদের মনে স্থান পেয়েছি বলেই শেষ বিদায়ে তারা আমাকে অশ্রুসিক্ত জলে বিদায় দিয়েছেন। আমি সার্থক এমন শিক্ষার্থীদের পেয়ে। আজকে শুধু আমার ফেয়ারওয়েল নয় শুধু শেষ কর্ম দিবস। আমি মনে করি আমার ছেলেরা যে আমাকে ভালবাসে তা আমি আগে জানতাম। তারা আজকে আমাকে বিদায় দিয়েছে। অবসর জীবনে আমি শিক্ষকতা করে কাটাতে পারলে ভালো হতো। তবে কৃষি কাজ সহ অন্যান্য কাজে বাকী সময় কাটাতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমার শিক্ষকেরা অনেক ভালো মনের মানুষ। তারা আমার এ প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালনে সর্বত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। সেজন্য তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

ক্যাম্পাস নিয়ে আরও পড়ুন

ব্যানারে লেখা হয়েছে আমরণ অনশন। এতে শারীরিক অবস্থা খারাপ থেকে আরো খারাপ হলেও অনশন থেকে সরে যাওয়ার সুযোগ নেই। দাবি আদায় করে তবেই এখান থেকে উঠবো। আমাদের অনশনের ব্যাপারে জরুরি মিটিং করে বা অনলাইনে মিটিং করে পদক্ষেপ নেয়া যেত। এখন পর্যন্ত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনো সদিচ্ছা দেখতে পারছি না

৮ ঘণ্টা আগে

সোমবার সকাল ৮টা থেকে আমরা সকল মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থী ক্লাস বর্জন করছি। যতদিন পর্যন্ত মহিউদ্দিন রনি ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর কাফি এবং অন্যান্য উস্কানিদাতাদের গ্রেফতার করা না হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা ক্লাস বর্জন করবো

৯ ঘণ্টা আগে

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানে সব দায়িত্ব ও তথ্য প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অন্তর্বর্ী প্রশাসক অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াসের কাছে হস্তান্তর করেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান।

৪ দিন আগে

২০১১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে বর্তমান পর্যন্ত ডিআইইউতে অধ্যাপকের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে ২০০৮ থেকে ২০১০ পর্যন্ত সহযোগী অধ্যাপক এবং ১৯৯৯ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত প্রভাষক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন

৫ দিন আগে