রাজনীতিতে গুরুত্ব বাড়ছে লন্ডনের!

প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪: ১৭
Thumbnail image

রোববার লন্ডনে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করে বিএনপির প্রতিনিধিদল। এসময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল দলটির সাত সদস্যের এই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনায় বিএনপি একেবারেই সন্তুষ্ট নয়। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর এ কথা বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এদিকে বিএনপির জ্যেষ্ঠ আরেক নেতা রুহুল কবির রিজভীকেও মোবাইলে পাচ্ছে না দলীয় নেতাকর্মীরা। দলীয় কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে না তাকে। আর অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ও তারুণ্যের প্রতীক ইশরাক হোসেনকেও তারেক রহমানের সাথে লন্ডনে দেখা গেছে। ইশরাক তারেক রহমানের সাথে তার নিজ ফেসবুক ওয়ালে দুজনের ছবি পোস্ট করেছেন। তার এই পোস্ট নেট দুনিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল। তাহলে কী বাংলার রাজনীতির আকাশ লন্ডনের দিকে হেলে পড়েছে!

প্রায় দুই সপ্তাহের সফর শেষে সোমবার সকালে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান দেশে ফিরেছেন। তবে নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এখনো দেশে ফিরেননি।

এ বিষয়ে শফিকুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, ‘বেগম জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। আমরা একসঙ্গে অনেকদিন কাজ করেছি। উনি অসুস্থ। ওনার খোঁজখবর নেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। বহুদিন পর আমাদের দেখা হয়েছে। আমরা ওনার জন্য দোয়া করেছি, দোয়া চেয়েছি।‘

তারেক রহমানের সঙ্গে কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুজন মানুষ একসঙ্গে হলে তো কথা হবেই। অন্যদিকে জামায়াতের আমিরের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠকের বিষয়ে বিএনপির সাবেক প্রেস সচিব মারুফ কামালের একটি পোস্টও ফেসবুকে দেখা গেছে। তবে এটি নিছক সাক্ষাৎ নাকি রাজনীতির নয়া সমীকরণ সেটি অবশ্য জানা যায়নি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও তারেক রহমানের একটি বৈঠক হয়েছে সম্প্রতি। এ নিয়েও রয়েছে নানা গুঞ্জন। তবে দলের অন্যতম কাণ্ডারি হিসেবে দলীয় প্রধানের সঙ্গে বৈঠক হতেই পারে। এ নিয়ে আসলেই খুব একটা কানাঘুষার কিছু নেই। কিন্তু যেহেতু বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদদের সঙ্গে অনেকটা সিরিজ বৈঠক হচ্ছে বিএনপির প্রধানের সঙ্গে তাই এ বিষয়ে কৌতূহল জাগতেই পারে রাজনৈতিক মহলে।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আসলেই কোন পথে যাচ্ছে বিভিন্ন দলের অবস্থান সেটি নিয়েও রয়েছে অনেক প্রশ্ন। আবারও কি বিএনপি-জামায়াতের পূর্বের জোটকে উজ্জীবিত করা হবে কি না সে নিয়েও কৌতূহল রয়েই গেল!

রুহুল কবির রিজভী

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতাকে নাকি দলের কোনো কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে না। তার মুঠোফোনেও বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ যোগাযোগ করে ব্যর্থ হয়েছেন বলে খবর চাউর হয়েছে। তবে এই সিনিয়র নেতাও কি লন্ডনে অবস্থান করছেন কি না সে নিয়েও কিন্তু আবার জন্ম হয়েছে নতুন কৌতূহলের। অনেক মহল ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ নানা প্রয়োজনে রিজভীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। তাহলে সকল বড় বড় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বর্তমানে লন্ডনে নির্বাচন বা রাজনৈতিক ইস্যুতে দিক-নির্দেশনা চাইতে বা সামনে তাদের করণীয় কী রয়েছে এসব নিয়ে আলোচনা করতে গেছেন? ঘুরেফিরে এমন প্রশ্নই তাড়া করে বেড়াচ্ছে নেতাকর্মীদের মাঝে।

ইশরাক হোসেন

বিএনপির তরুণ নেতা ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইশরাক হোসেনও নাকি লন্ডনে অবস্থান করছেন। এ মর্মে একটি ছবি ফেসবুকে ঘুরছে। সেখানে দেখা যায়, দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ইশরাক দাঁড়িয়ে রয়েছেন। পোস্টটি ইশরাক নিজেই করেন। দেখা যায় সেখানে তিনি তারেক রহমানের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। একই ছবি বিএনপির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও শেয়ার করা হয়। বিএনপির চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির বিশেষ সহকারী ইশরাক হোসেন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে বিষয়টি জানান। তিনি সে পোস্টে তিন শব্দে তারেক রহমানকে তুলে ধরেন, ‘লিডার, মোটিভেটর, মেনটর’। তবে এ সাক্ষাতে কী আলোচনা হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। দলের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি।

এর আগে, গত ২৭ মার্চ ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করেছেন আদালত। ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম এ রায় দেন। সম্প্রতি লন্ডনে নেতাদের অবস্থান কিংবা যাওয়া-আসার এই মেলায় এখন আবার শোনা যাচ্ছে জাতীয় পার্টির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের নামও হয়ত যুক্ত হতে পারে। রাজনৈতিক মাঠের সামনের নানান হিসাবনিকাশ এখন কোনদিকে রূপ নিবে সেটিই এখন দেখার বিষয়। এদিকে প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকের পর বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান উপদেষ্টা কোনো সুনির্দিষ্ট ডেডলাইন তাঁদের দেননি। তিনি ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা একেবারেই সন্তুষ্ট নই। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, ডিসেম্বর মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে।’

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

বিএনপি নিয়ে আরও পড়ুন

যথাযোগ্য মর্যাদায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের জন্য সভায় সর্বসম্মতিক্রমে বেশকিছু কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়

১ ঘণ্টা আগে

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে বিএনপির একাংশের নেতা-কর্মীরা মশাল মিছিল করে অর্ধদিবস হরতালের ডাক দেন। সেই হরতালের সমর্থনের মিছিল থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে

২ ঘণ্টা আগে

সম্প্রতি ঘোষিত নকলা উপজেলা সমন্বয় কমিটি অযোগ্য, অনাদর্শিক ও সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য প্রধান সমন্বয়কারীর নেতৃত্বে গঠিত হওয়ায় তারা কমিটি প্রত্যাখান করছেন। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব বরাবর লিখিত পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন

৫ ঘণ্টা আগে

মির্জা ফখরুল মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান এবং রাত ১১টা পর্যন্ত গুলশানে একটি বৈঠকে অংশ নেন। এরপর তিনি অসুস্থ বোধ করলে রাত ১টার দিকে তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়

৮ ঘণ্টা আগে