বাংলাদেশ-মিয়ানমার একমত হলে রাখাইন করিডোর চালু করবে জাতিসংঘ

প্রতিনিধি
নিখাদ খবর ডেস্ক
Thumbnail image
ফাইল ছবি

রাখাইনে মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে মানবিক করিডর স্থাপনের জন্য আগে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সরকারকে একমত হতে হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয়। আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে এবং রাখাইনের ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে উদ্বিগ্ন। উন্নয়ন সহযোগীদের নিয়ে জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সহায়তা চালিয়ে যাবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে সীমানা পেড়িয়ে মিয়ানমারে যে কোনো ধরনের মানবিক সহায়তার বিষয়ে আগে দুই দেশের সরকারকে একমত হতে হবে। এ ধরনের আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের অনুমতি নেওয়ার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি ছাড়া জাতিসংঘের কার্যক্রম অত্যন্ত সীমিত।

রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির তীব্র সংঘাত চলছে। প্রদেশটির অধিকাংশ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ এখন আরাকান আর্মির কাছে। মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সীমান্ত তাও নিয়ন্ত্রণ করছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি।

গত মার্চে বাংলাদেশ সফরে এসে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস রাখাইনে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশের সহযোগিতা চান। এর অংশ হিসেবে একটি মানবিক প্যাসেজ তৈরির প্রস্তাবও দেন তিনি।

এরমধ্যে গত ২৭ এপ্রিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, জাতিসংঘের প্রস্তাবে নীতিগতভাবে একমত হয়েছে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি এটুকু আপনাদেরকে বলতে পারি, নীতিগতভাবে আমরা এটাতে সম্মত। কারণ, মানবিক প্যাসেজ হবে। আমাদের কিছু শর্ত আছে। এ শর্তে রাজি হলে আমরা অবশ্যই সহায়তা করবো, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে অবশ্যই।’

পররাষ্ট্র উপদেষ্টার এ বক্তব্যের পর বাংলাদেশে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ধরেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, দেশের স্বার্থে মিয়ানমার জান্তা সরকার বা আরাকান আর্মি কারও পক্ষ নেওয়াই উচিত হবে না। এতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আরও জটিল হতে পারে। আঞ্চলিক রাজনীতিতেও মেরূকরণ হতে পারে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করে এমন সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হলো তা নিয়ে সমালোচনাও হয়। গত ২৮ এপ্রিল ঠাকুরগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আরাকানদের সাথে যোগাযোগের জন্য যে হিউম্যানিটি প্যাসেজ তৈরি করার সিদ্ধান্ত; সেটি সকল দলের মতামতের ভিত্তিতে নেওয়া উচিত ছিল।’

এর একদিন পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে জানান, তথাকথিত ‘মানবিক করিডোর’নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে সরকার কোনো আলোচনা করেনি।

প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, সরকার জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে তথাকথিত ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে কোনো আলোচনা করেনি। আমাদের অবস্থান হলো–যদি জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাখাইনে মানবিক সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ সহায়তা দিতে প্রস্তুত।’

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

এশিয়া নিয়ে আরও পড়ুন

যদি যুক্তরাষ্ট্র পারস্পরিক স্বার্থ ও সমতার ভিত্তিতে কথা বলতে চায়, তবে ইরান পরোক্ষ আলোচনায় অংশ নিতে প্রস্তুত। তবে তিনি জানান, ওয়াশিংটনের দেওয়া শর্তগুলো—সরাসরি আলোচনা, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ, ক্ষেপণাস্ত্র মজুতে সীমা আরোপ এবং আঞ্চলিক মিত্রদের প্রতি ইরানের সমর্থন বন্ধ করা—অযৌক্তিক ও অন্যায্য

১০ ঘণ্টা আগে

ভারতের মুম্বাইয়ের পালি হিল থেকে দিল্লির রিলায়েন্স সেন্টার পর্যন্ত অন্তত আটটি শহরে অনিল আম্বানির রিলায়েন্স গ্রুপের প্রায় ৩ হাজার ৮৪ কোটি রুপির সম্পত্তি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) বাজেয়াপ্ত করেছে

১ দিন আগে

এই সহযোগিতার আওতায় চারটি কেন্দ্র বুশেহর অঞ্চলে এবং বাকি চারটি দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্মিত হবে, যার সুনির্দিষ্ট অবস্থান পরবর্তীতে সরকার ঘোষণা করবে

১ দিন আগে

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ নিশ্চিত করতে সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন

১ দিন আগে