রাশিয়ার অস্ত্রশিল্পে সহায়তা করছে চীন, অভিযোগ ইউক্রেনের

প্রতিনিধি
অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

টানা তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ। দীর্ঘ এই সময়ে রুশ আগ্রাসন ও ইউক্রেনের পালটা হামলায় হয়েছে হাজারও মানুষের প্রাণহানি। হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে সামরিক ও বেসামরিক সকল অবকাঠামো।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে চীনের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ইউক্রেনের সাম্প্রতিক অভিযোগ অনুযায়ী, চীন সরাসরি রাশিয়ার সামরিক শিল্পে সহায়তা করছে। কিয়েভের বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ওলেহ ইভাশচেঙ্কো এই দাবি করেছেন, যা আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোও চীনের ভূমিকা নিয়ে সতর্ক নজর রাখছে। ইউক্রেনের অভিযোগের পর হয়তো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তরফ থেকে চীনের প্রতি চাপ আরও বাড়তে পারে বিশেষ করে যদি এটি প্রমাণযোগ্য তথ্য-প্রমাণের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়।

সোমবার ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা ইউক্রইনফর্ম–এ প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে ইভাশচেঙ্কো বলেন, “আমাদের কাছে নিশ্চিত প্রমাণ রয়েছে যে চীন রাশিয়ার অন্তত ২০টি সামরিক কারখানায় গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল সরবরাহ করছে।”

চীন অবশ্য বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। তারা দাবি করে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তারা নিরপেক্ষ অবস্থানে রয়েছে এবং কোনও পক্ষকেই সামরিক সহায়তা দিচ্ছে না। তবে ইউক্রেন বলছে, চীন আসলে রাশিয়াকে যুদ্ধে সহযোগিতা করছে।

ইভাশচেঙ্কোর ভাষ্যমতে, যন্ত্র তৈরির সরঞ্জাম, বিশেষ রাসায়নিক উপাদান, বারুদ এবং রাশিয়ার সামরিক উৎপাদন কারখানার জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ পাঠাচ্ছে চীন। তিনি আরও বলেন, “২০২৪ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে অন্তত পাঁচটি চীন-রাশিয়া যৌথ প্রকল্প ছিল এভিয়েশন খাতে—যেখানে যন্ত্রাংশ, সরঞ্জাম ও কারিগরি তথ্যের আদান-প্রদান হয়েছে।”

এছাড়া অন্তত ছয়বার বিশেষ রাসায়নিক পদার্থের বড় চালান রাশিয়ায় পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি, যদিও এর বিস্তারিত তিনি দেননি।

ইউক্রেনের দাবি অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শুরু পর্যন্ত রাশিয়ার ব্যবহৃত ড্রোনে যে ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ পাওয়া গেছে, তার ৮০ শতাংশ এসেছে চীন থেকে। এছাড়া চীন থেকে বিভিন্ন ছায়া প্রতিষ্ঠানের (শেল কোম্পানি) মাধ্যমে সরঞ্জাম আনছে রাশিয়া, যেগুলোর নাম বদলে ফেলা হয় এবং পণ্য চিহ্ন লুকিয়ে রাখা হয়।

এর আগে গত মাসেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে বলেন, চীন রাশিয়াকে বারুদ ও ড্রোন তৈরির উপাদান দিচ্ছে এবং এমনকি চীনা নাগরিকরা রাশিয়ার ড্রোন উৎপাদনে সহায়তাও করছে।

তার এই অভিযোগের পর চীন সেটাকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করে। এরপর ইউক্রেন তিনটি চীনা প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

মূলত রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর চীন আন্তর্জাতিকভাবে নিরপেক্ষতার ভাবমূর্তি তুলে ধরলেও, বেইজিং ও মস্কোর মধ্যে বাণিজ্যিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও রাশিয়ার জন্য অন্যতম প্রধান সরঞ্জাম সরবরাহকারী হয়ে উঠেছে চীন।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

এশিয়া নিয়ে আরও পড়ুন

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধবন্ধে একাট্টা হয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভলাদিমির পুতিন

১৪ ঘণ্টা আগে

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হওয়ায় যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টা আরো জটিল হয়ে উঠছে।

১৬ ঘণ্টা আগে

সাম্প্রতিক সময়ে কিছু অস্থায়ী চিকিৎসা-মানবিক ভিসা প্রদানের পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া নিয়ে পূর্ণাঙ্গ ও গভীর পর্যালোচনার জন্য এই বিরতি দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি কিছু ফিলিস্তিনি অধিকার সংস্থা থেকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে

১৬ ঘণ্টা আগে

দেশটির অন্যতম দরিদ্র এলাকা সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশে এই সংঘর্ষটি ঘটেছে। এখানে নিরাপত্তা বাহিনী ও বেলুচ সংখ্যালঘু বিদ্রোহী, সুন্নি চরমপন্থী গ্রুপ ও মাদক পাচারকারীদের মধ্যে নিয়মিত সহিংসতা ঘটে থাকে

১৬ ঘণ্টা আগে