ফুলগাজীতে সাইনবোর্ড থাকলেও নদীর তীরে ময়লার ভাগাড়

দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ পথচারী ও এলাকাবাসী, স্থায়ী সমাধান চান স্থানীয়রা

প্রতিনিধি
ফেনী
Thumbnail image
ছবি: প্রতিনিধি

ফেনীর ফুলগাজী বাজারের পুরাতন রোডের সড়ক ব্রিজসংলগ্ন একটি খালি জায়গা এখন পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে। অথচ সেখানে স্পষ্টভাবে লেখা রয়েছে— “নদী ও নদীর তীরবর্তী স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

পরিবেশ অধিদপ্তরের এ সতর্ক বার্তা যেন কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবে প্রতিদিনই সেখানে ফেলা হচ্ছে বাজারের ও গৃহস্থালির নানা বর্জ্য, যার দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসছে আশপাশের মানুষদের।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নদীর পাড় ঘেঁষে গড়ে উঠেছে বর্জ্যের স্তূপ। প্লাস্টিক, খাদ্য বর্জ্য, পচা সবজি ও অন্যান্য আবর্জনা থেকে নির্গত দুর্গন্ধে এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে দূষণময় পরিবেশ। প্রতিদিন শত শত মানুষ ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করলেও দুর্গন্ধে হাঁটা দায় হয়ে পড়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এতে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে, পাশাপাশি সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা কামরুজ্জামান পারভেজ মুন্না বলেন, “অনেক দিন ধরেই এই জায়গায় অবাধে ময়লা ফেলা হচ্ছে। গরমের সময় দুর্গন্ধ এতটাই বাড়ে যে জানালা খুলে থাকা যায় না। আমাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে ভীষণ কষ্টে আছি।”

অন্য এক বাসিন্দা রাকিব আল সৌরভ বলেন, “এখানে বড় বড় সাইনবোর্ড ঝুলছে— নিষেধাজ্ঞার কথা লেখা আছে। কিন্তু কেউ মানছে না। বাজারের অনেকে প্রতিদিন ভোরে এসে ময়লা ফেলে চলে যায়। প্রশাসন যদি একটু নজর দিত, তাহলে এই অবস্থা হতো না।”

ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. খোরশেদ আলম জানান, “ডাম্পিং স্টেশনের অভাবেই এ সমস্যা দীর্ঘদিনের। সরকারিভাবে একটি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে বাজার ও নদীর তীরের ময়লা ব্যবস্থাপনা অনেক সহজ হবে।”

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাশিয়াত আকতার বলেন, “নদী দূষণ রোধে আমরা নিয়মিত সচেতনতা কার্যক্রম চালাচ্ছি। মাইকিং ও সাইনবোর্ডের মাধ্যমে মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে। তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য একটি ডাম্পিং স্টেশন স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে।”

পরিবেশ অধিদপ্তর ফেনীর উপপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) সংযুক্তা দাশ গুপ্তা বলেন, “বাজার বা জনবসতিপূর্ণ এলাকায় যত্রতত্র ময়লা ফেলা সম্পূর্ণ বেআইনি। আমরা সতর্কতামূলক বোর্ড দিয়েছি, পাশাপাশি অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে টেকসই সমাধান নিশ্চিত করা হবে।”

এলাকাবাসী মনে করছেন, দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে নদী ও আশপাশের পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে। তারা প্রশাসনের কাছে স্থায়ী ডাম্পিং স্টেশন স্থাপন ও নিয়ম অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

জেলা নিয়ে আরও পড়ুন

মা ও নবজাতকরা বর্তমানে সুস্থ আছেন এবং হাসপাতালের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন

৩ ঘণ্টা আগে

র্তমানে তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে তিস্তার পানি দ্রুত সরে যাচ্ছে। এর ফলে গঙ্গাচড়ায় বন্যার অবস্থা উন্নতি হচ্ছে এবং ভাটি এলাকা কাউনিয়ার কিছু নিম্নাঞ্চল নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে

৩ ঘণ্টা আগে

প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এতে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে, পাশাপাশি সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ছে

৩ ঘণ্টা আগে

আগামী ১২ অক্টোবর থেকে মাসব্যাপী জেলায় টাইফয়েড টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে জেলার সকল শিশুদের টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন সংস্থা যৌথভাবে কাজ করবে

৩ ঘণ্টা আগে