বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫
  • সর্বশেষ
  • বিশ্ব
  • বিশেষ সংবাদ
  • রাজনীতি
  • বিনোদন
  • জীবনযাপন
  • খেলা
  • বাংলাদেশ
  • অর্থনীতি
  • ইপেপার
  • ইপেপার
nikhad logo
অনুসরণ করুন
facebooktwittertiktokpinterestyoutubelinkedininstagramgoogle
  • নিখাদ খবর
  • বিজ্ঞাপন
  • সার্কুলেশন
  • শর্তাবলি ও নীতিমালা
  • গোপনীয়তা নীতি
  • যোগাযোগ
স্বত্ব: ©️ দৈনিক নিখাদ খবর|প্রকাশক ও সম্পাদক: পারভীন আফরোজ খান
বাংলাদেশ
অপরাধ

আনভীরকে বৈধতা দেয়ায় বেড়েছে ধর্ষণ

প্রতিনিধি
মোঃ মাজহারুল পারভেজ
প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৫, ২১: ১৯
আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৫, ০০: ১৭
logo

আনভীরকে বৈধতা দেয়ায় বেড়েছে ধর্ষণ

মোঃ মাজহারুল পারভেজ

প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৫, ২১: ১৯
Photo
ফাইল ছবি

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধিত ২০২০) অনুযায়ী, আমাদের দেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ‘মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’। এমন কঠোর আইন থাকা সত্ত্বেও রীতিমতো একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেই চলছে। দিন দিন ধর্ষণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো, আইনের সঠিক বাস্তবায়ন না হওয়া।

Inset

এছাড়াও অন্যতম প্রধান কারণটি হলো রাজনৈতিক পরিচয়, ক্ষমতার প্রভাব ও অবৈধ টাকার ব্যবহার। অপরাধীরা তাদের রাজনৈতিক পরিচয়কে অস্ত্র ও শাস্তি ঠেকানোর ঢাল হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ পায়। তারা জানে পুলিশ, আইন, বিচার তথা প্রশাসন সবকিছুই তাদের অপরাধের আশ্রয়স্থল। তারা জানে যে, এসব প্রতিষ্ঠানকে ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে দমিয়ে রাখা যায়। তাই তারা অনায়াসে নির্ভয়ে নানা রকম অপরাধে যুক্ত হয়ে পড়ে।

গত ২৬ এপ্রিল রাতে ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় ২১ বছর বয়সী মোশারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় রাতেই মেয়েটির বড়বোন বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তাতে ‘’আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার’’ অভিযোগ আনা হয়। মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছিলো যে ওই তরুণীর সাথে মি. আনভীরের দুই বছর যাবৎ সম্পর্ক ছিল।

সেই মামলার তদন্ত শেষে ১৮ই অগাস্ট পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। সেখানে মামলা থেকে একমাত্র অভিযুক্ত সায়েম সোবহান আনভীরকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

মামলার এজাহারে বাদী দাবি করেছিলেন, আসামিরা মুনিয়াকে ঢাকা ছাড়তে বলেছিল, নইলে তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। মামলার এজাহারে আরো বলা হয়, ‘বিয়ের প্রলোভন’ দেখিয়ে সায়েম সোবহান আনভীর সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন মুনিয়ার সঙ্গে। ওই বাসায় তার যাতায়াত ছিল। কিন্তু বিয়ে না করে তিনি উল্টো ‘হুমকি’ দিয়েছিলেন মুনিয়াকে।

মামলাটির তিনমাসের তদন্তে পুলিশ একবারের জন্যেও আনভীরকে জিজ্ঞাসাবাদ বা আটক করেনি। পরে মামলার একমাত্র আসামি আনভীরের নাম বাদ দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ।

পুলিশের ওই প্রতিবেদনে অনাস্থা জানিয়ে মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান অন্য কেনো সংস্থার মাধ্যমে মামলাটি তদন্তের আবেদন করেছিলেন। তা খারিজ করে ঢাকার মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে সায়েম সোবহান আনভীরকে কলেজছাত্রী মুনিয়ার ‘আত্মহত্যার প্ররোচনা’র অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন।

এরপর তিনি পরবর্তীতে মোসারাতের বোন নুসরাত জাহান ৬ই সেপ্টেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ এনে নালিশি মামলা করেন। আদালত মামলাটি এজাহার হিসাবে রেকর্ড করার জন্য গুলশান থানাকে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি পিবিআইকে তদন্ত করার আদেশ দেন।

এক বছরের বেশি সময় তদন্তের পর সেই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। পুলিশের সেই প্রতিবেদনের পর মামলার অভিযোগ থেকে খালাস পেয়ে ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর ও তার পরিবারের সদস্যরা। অব্যাহতি পাওয়া অপর আসামিরা হলেন আনভীরের বাবা আহমেদ আকবর সোবহান, মা আফরোজা সোবহান, স্ত্রী সাবরিনা, শারমিন, সাইফা রহমান মিম, মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও ইব্রাহিম আহমেদ রিপন।

২০২২ সালে বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভীরসহ ৮ জনকে অব্যাহতির আবেদন করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পিবিআই। পরে এ প্রতিবেদনে নারাজি দাখিল করেন মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান। নারাজির বিষয়ে শুনানির পর আদালত আদেশের জন্য ২০ মার্চ ধার্য করেন। নারাজি আবেদন নাকচ করে আদালত পরে তাদের অব্যাহতি দেন।

ফ্যসিস্ট সরকারের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এ মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। পিবিআই তাদের তদন্তে হত্যা বা ধর্ষণের অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছিলো। কিন্তু দেশের মানুষ তখন এ তদন্ত মেনে নেয় নি। মেনে নেয়নি মামলার বাদী ও মৃত মোসারাত জাহান মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহানও। তিনি এই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। বোনের জন্য বিচার পেতে তিনি আইন ও আদালতের যতদূর যাওয়া সম্ভব, তিনি যাবেন বলে জানিয়েছিলেন। পরে দেশের বৃহৎ এই শিল্প গোষ্ঠির চাপে ও ভয়ে ঢাকার রাজ পথে বের হতে আর সাহস পাননি বাদী। থেমে যায় বিচার পাওয়ার চেষ্টা।

এরপর আস্তে আস্তে এ ঘটনা ভুলে যেতে থাকে দেশবাসী। বেড়ে যায় দেশে ধর্ষণের মত জঘন্যতম অপরাধ। সম্প্রতি শিশু আছিয়ার ঘটনার পর ঘুরে ফিরে আবার অনেককেই বলতে শুনা যায়,মুনিয়ার ঘটনার প্রকৃত বিচার হলে হয়তো দেশে আর এমন ধরণের ঘটনা ঘটতো না।

কলেজ পড়ুয়া রুপসী তরুণী মুনিয়ার মৃত্যুকে ঘিরে তখন ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয় বাংলাদেশে। মি. আনভীর বাংলাদেশের বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠীর একটি বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক হওয়ায় তার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে বিস্তর তর্কবিতর্ক হয় তখন। এতকিছুর পরও আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাঠায় পিবিআই। পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সরোয়ার জাহান তখন সাংবাদিকদের বলেছিলেন এই মামলায় যে কয়েকজনকে আসামী করা হয়েছিল, সবাইকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এর কারণ হচ্ছে, এখানে দুটি অভিযোগ আছে। একটি হচ্ছে ধর্ষণ, আরেকটি হত্যা।

‘’এখানে ধর্ষণের ঘটনায় আমরা কোন প্রমাণ পাইনি, কারণ হচ্ছে দুজন অ্যাডাল্ট ছেলেমেয়ে। তাদের দুজনের সম্মতিতেই এক জায়গায় ছিল, এক জায়গায় অবস্থান করেছে, এই মর্মে আমরা তথ্যপ্রমাণ পেয়েছি। আর হত্যার বিষয়টি প্রমাণিত হয়নি। কারণ এখানে সুইসাইডের ঘটনা ঘটেছে। এখানে কোন প্ররোচনার ইস্যুটাও আসেনি।’’ বাহাবা দেয়ার মত কথা বলেছিলেন পিবিআইয়ের এই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। তারই এই প্রতিবেদন দেশের একজন মানুষও মেনে নেয়নি। তবে রাষ্ট্র মেনে নিয়েছিল। ফ্যাসিষ্ট সরকারে সাথে ছিলো এই পরিবোরের গভির সখ্যতা।

যাইহোক,বর্তমানে ধর্ষণ দেশের আলোচিত ঘটনাগুলোর অন্যতম একটি। চারদিকে বিষবাষ্পের মত ধর্ষণ মহামারী আকার ধারণ করেছে। দিন দিন ধর্ষণপ্রবণতা বেড়েই চলছে। পত্রিকার পাতা, টেলিভিশনের পর্দা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুধুই ধর্ষণের খবর।ধর্ষণ আমাদের জাতীয় জীবনে একটি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি একটি সর্বগ্রাসী অপরাধেও পরিণত হতে চলছে। প্রমাণিত ধর্ষকের পক্ষে উকিল নিয়োগ নিষিদ্ধ করা দরকার। ১. ‘ধর্ষণ’-কে অন্যতম প্রধান জাতীয় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা প্রয়োজন।

এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে ধর্ষকের শাস্তি দ্রুত সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে জরুরি ভাবে আইনি সংস্কার করা যেতে পারে। যৌন উত্তেজক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ওপর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ জারি করা যেতে পারে। স্মার্টফোনে নিম্নমানের কালচার উপাদান উপভোগে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। বহুবিধ সম্পর্ক, পরকীয়া ও ব্যাভিচার নিয়ন্ত্রণে আইনি সংস্কার আনতে হবে। শিক্ষাদানের লক্ষ্যে প্রতিটি স্তরে নৈতিক শিক্ষার কোর্স বাধ্যতামূলক করতে হবে। ধর্ষককে পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে বয়কট করতে হবে ।

Thumbnail image
ফাইল ছবি

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধিত ২০২০) অনুযায়ী, আমাদের দেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ‘মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’। এমন কঠোর আইন থাকা সত্ত্বেও রীতিমতো একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেই চলছে। দিন দিন ধর্ষণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো, আইনের সঠিক বাস্তবায়ন না হওয়া।

Inset

এছাড়াও অন্যতম প্রধান কারণটি হলো রাজনৈতিক পরিচয়, ক্ষমতার প্রভাব ও অবৈধ টাকার ব্যবহার। অপরাধীরা তাদের রাজনৈতিক পরিচয়কে অস্ত্র ও শাস্তি ঠেকানোর ঢাল হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ পায়। তারা জানে পুলিশ, আইন, বিচার তথা প্রশাসন সবকিছুই তাদের অপরাধের আশ্রয়স্থল। তারা জানে যে, এসব প্রতিষ্ঠানকে ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে দমিয়ে রাখা যায়। তাই তারা অনায়াসে নির্ভয়ে নানা রকম অপরাধে যুক্ত হয়ে পড়ে।

গত ২৬ এপ্রিল রাতে ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় ২১ বছর বয়সী মোশারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় রাতেই মেয়েটির বড়বোন বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তাতে ‘’আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার’’ অভিযোগ আনা হয়। মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছিলো যে ওই তরুণীর সাথে মি. আনভীরের দুই বছর যাবৎ সম্পর্ক ছিল।

সেই মামলার তদন্ত শেষে ১৮ই অগাস্ট পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। সেখানে মামলা থেকে একমাত্র অভিযুক্ত সায়েম সোবহান আনভীরকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

মামলার এজাহারে বাদী দাবি করেছিলেন, আসামিরা মুনিয়াকে ঢাকা ছাড়তে বলেছিল, নইলে তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। মামলার এজাহারে আরো বলা হয়, ‘বিয়ের প্রলোভন’ দেখিয়ে সায়েম সোবহান আনভীর সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন মুনিয়ার সঙ্গে। ওই বাসায় তার যাতায়াত ছিল। কিন্তু বিয়ে না করে তিনি উল্টো ‘হুমকি’ দিয়েছিলেন মুনিয়াকে।

মামলাটির তিনমাসের তদন্তে পুলিশ একবারের জন্যেও আনভীরকে জিজ্ঞাসাবাদ বা আটক করেনি। পরে মামলার একমাত্র আসামি আনভীরের নাম বাদ দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ।

পুলিশের ওই প্রতিবেদনে অনাস্থা জানিয়ে মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান অন্য কেনো সংস্থার মাধ্যমে মামলাটি তদন্তের আবেদন করেছিলেন। তা খারিজ করে ঢাকার মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে সায়েম সোবহান আনভীরকে কলেজছাত্রী মুনিয়ার ‘আত্মহত্যার প্ররোচনা’র অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন।

এরপর তিনি পরবর্তীতে মোসারাতের বোন নুসরাত জাহান ৬ই সেপ্টেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ এনে নালিশি মামলা করেন। আদালত মামলাটি এজাহার হিসাবে রেকর্ড করার জন্য গুলশান থানাকে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি পিবিআইকে তদন্ত করার আদেশ দেন।

এক বছরের বেশি সময় তদন্তের পর সেই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। পুলিশের সেই প্রতিবেদনের পর মামলার অভিযোগ থেকে খালাস পেয়ে ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর ও তার পরিবারের সদস্যরা। অব্যাহতি পাওয়া অপর আসামিরা হলেন আনভীরের বাবা আহমেদ আকবর সোবহান, মা আফরোজা সোবহান, স্ত্রী সাবরিনা, শারমিন, সাইফা রহমান মিম, মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও ইব্রাহিম আহমেদ রিপন।

২০২২ সালে বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভীরসহ ৮ জনকে অব্যাহতির আবেদন করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পিবিআই। পরে এ প্রতিবেদনে নারাজি দাখিল করেন মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান। নারাজির বিষয়ে শুনানির পর আদালত আদেশের জন্য ২০ মার্চ ধার্য করেন। নারাজি আবেদন নাকচ করে আদালত পরে তাদের অব্যাহতি দেন।

ফ্যসিস্ট সরকারের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এ মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। পিবিআই তাদের তদন্তে হত্যা বা ধর্ষণের অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছিলো। কিন্তু দেশের মানুষ তখন এ তদন্ত মেনে নেয় নি। মেনে নেয়নি মামলার বাদী ও মৃত মোসারাত জাহান মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহানও। তিনি এই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। বোনের জন্য বিচার পেতে তিনি আইন ও আদালতের যতদূর যাওয়া সম্ভব, তিনি যাবেন বলে জানিয়েছিলেন। পরে দেশের বৃহৎ এই শিল্প গোষ্ঠির চাপে ও ভয়ে ঢাকার রাজ পথে বের হতে আর সাহস পাননি বাদী। থেমে যায় বিচার পাওয়ার চেষ্টা।

এরপর আস্তে আস্তে এ ঘটনা ভুলে যেতে থাকে দেশবাসী। বেড়ে যায় দেশে ধর্ষণের মত জঘন্যতম অপরাধ। সম্প্রতি শিশু আছিয়ার ঘটনার পর ঘুরে ফিরে আবার অনেককেই বলতে শুনা যায়,মুনিয়ার ঘটনার প্রকৃত বিচার হলে হয়তো দেশে আর এমন ধরণের ঘটনা ঘটতো না।

কলেজ পড়ুয়া রুপসী তরুণী মুনিয়ার মৃত্যুকে ঘিরে তখন ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয় বাংলাদেশে। মি. আনভীর বাংলাদেশের বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠীর একটি বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক হওয়ায় তার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে বিস্তর তর্কবিতর্ক হয় তখন। এতকিছুর পরও আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাঠায় পিবিআই। পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সরোয়ার জাহান তখন সাংবাদিকদের বলেছিলেন এই মামলায় যে কয়েকজনকে আসামী করা হয়েছিল, সবাইকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এর কারণ হচ্ছে, এখানে দুটি অভিযোগ আছে। একটি হচ্ছে ধর্ষণ, আরেকটি হত্যা।

‘’এখানে ধর্ষণের ঘটনায় আমরা কোন প্রমাণ পাইনি, কারণ হচ্ছে দুজন অ্যাডাল্ট ছেলেমেয়ে। তাদের দুজনের সম্মতিতেই এক জায়গায় ছিল, এক জায়গায় অবস্থান করেছে, এই মর্মে আমরা তথ্যপ্রমাণ পেয়েছি। আর হত্যার বিষয়টি প্রমাণিত হয়নি। কারণ এখানে সুইসাইডের ঘটনা ঘটেছে। এখানে কোন প্ররোচনার ইস্যুটাও আসেনি।’’ বাহাবা দেয়ার মত কথা বলেছিলেন পিবিআইয়ের এই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। তারই এই প্রতিবেদন দেশের একজন মানুষও মেনে নেয়নি। তবে রাষ্ট্র মেনে নিয়েছিল। ফ্যাসিষ্ট সরকারে সাথে ছিলো এই পরিবোরের গভির সখ্যতা।

যাইহোক,বর্তমানে ধর্ষণ দেশের আলোচিত ঘটনাগুলোর অন্যতম একটি। চারদিকে বিষবাষ্পের মত ধর্ষণ মহামারী আকার ধারণ করেছে। দিন দিন ধর্ষণপ্রবণতা বেড়েই চলছে। পত্রিকার পাতা, টেলিভিশনের পর্দা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুধুই ধর্ষণের খবর।ধর্ষণ আমাদের জাতীয় জীবনে একটি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি একটি সর্বগ্রাসী অপরাধেও পরিণত হতে চলছে। প্রমাণিত ধর্ষকের পক্ষে উকিল নিয়োগ নিষিদ্ধ করা দরকার। ১. ‘ধর্ষণ’-কে অন্যতম প্রধান জাতীয় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা প্রয়োজন।

এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে ধর্ষকের শাস্তি দ্রুত সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে জরুরি ভাবে আইনি সংস্কার করা যেতে পারে। যৌন উত্তেজক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ওপর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ জারি করা যেতে পারে। স্মার্টফোনে নিম্নমানের কালচার উপাদান উপভোগে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। বহুবিধ সম্পর্ক, পরকীয়া ও ব্যাভিচার নিয়ন্ত্রণে আইনি সংস্কার আনতে হবে। শিক্ষাদানের লক্ষ্যে প্রতিটি স্তরে নৈতিক শিক্ষার কোর্স বাধ্যতামূলক করতে হবে। ধর্ষককে পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে বয়কট করতে হবে ।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

অপরাধ নিয়ে আরও পড়ুন

রাজধানীর সব মোবাইল মার্কেট বন্ধ, ক্রেতারা হতাশ ও হতবুদ্ধি

রাজধানীর সব মোবাইল মার্কেট বন্ধ, ক্রেতারা হতাশ ও হতবুদ্ধি

রাজধানীতে মোবাইল ব্যবসায়ীরা বন্ধ ঘোষণা করায় ক্রেতাদের জন্য দিনের শুরু থেকেই বিভ্রান্তি ও ভিড়ের সৃষ্টি হয়েছে। বসুন্ধরা সিটি মোবাইল মার্কেট, মোতালেব প্লাজা, স্টার্ন প্লাজাসহ বিভিন্ন বাজারে ক্রেতারা মোবাইল কিনতে বা সারাতে এসে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন, কারণ দোকানপাট বন্ধ

৪ ঘণ্টা আগে
পেছাচ্ছে বেরোবির শীতকালীন ছুটি

পেছাচ্ছে বেরোবির শীতকালীন ছুটি

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শীতকালীন ছুটি নতুন করে পুনঃনির্ধারণ করেছে

৫ ঘণ্টা আগে
টাঙ্গাইলে মেয়েকে হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যা

টাঙ্গাইলে মেয়েকে হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যা

টাঙ্গাইলের সখীপুরে মা–মেয়ের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) গভীর রাতে গজারিয়া ইউনিয়নের মুচারিয়া পাথার গ্রামে মানসিক ও শারীরিক চাপ সহ্য করতে না পেরে মা শাহনাজ বেগম (৫৮) নিজের প্রতিবন্ধী মেয়ে সাজেদাকে (২৬) শ্বাসরোধে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশের প্রাথমিক ধারণা

৭ ঘণ্টা আগে
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বিপুল নেশা ট্যাবলেট জব্দ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বিপুল নেশা ট্যাবলেট জব্দ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের মনাকষা ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নেশাজাতীয় ট্যাবলেট জব্দ করেছে ৫৩ বিজিবি

৭ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর সব মোবাইল মার্কেট বন্ধ, ক্রেতারা হতাশ ও হতবুদ্ধি

রাজধানীর সব মোবাইল মার্কেট বন্ধ, ক্রেতারা হতাশ ও হতবুদ্ধি

রাজধানীতে মোবাইল ব্যবসায়ীরা বন্ধ ঘোষণা করায় ক্রেতাদের জন্য দিনের শুরু থেকেই বিভ্রান্তি ও ভিড়ের সৃষ্টি হয়েছে। বসুন্ধরা সিটি মোবাইল মার্কেট, মোতালেব প্লাজা, স্টার্ন প্লাজাসহ বিভিন্ন বাজারে ক্রেতারা মোবাইল কিনতে বা সারাতে এসে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন, কারণ দোকানপাট বন্ধ

৪ ঘণ্টা আগে
পেছাচ্ছে বেরোবির শীতকালীন ছুটি

পেছাচ্ছে বেরোবির শীতকালীন ছুটি

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শীতকালীন ছুটি নতুন করে পুনঃনির্ধারণ করেছে

৫ ঘণ্টা আগে
টাঙ্গাইলে মেয়েকে হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যা

টাঙ্গাইলে মেয়েকে হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যা

টাঙ্গাইলের সখীপুরে মা–মেয়ের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) গভীর রাতে গজারিয়া ইউনিয়নের মুচারিয়া পাথার গ্রামে মানসিক ও শারীরিক চাপ সহ্য করতে না পেরে মা শাহনাজ বেগম (৫৮) নিজের প্রতিবন্ধী মেয়ে সাজেদাকে (২৬) শ্বাসরোধে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশের প্রাথমিক ধারণা

৭ ঘণ্টা আগে
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বিপুল নেশা ট্যাবলেট জব্দ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বিপুল নেশা ট্যাবলেট জব্দ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের মনাকষা ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নেশাজাতীয় ট্যাবলেট জব্দ করেছে ৫৩ বিজিবি

৭ ঘণ্টা আগে