ডায়াবেটিস হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

প্রতিনিধি
Thumbnail image
ছবি : প্রতিনিধি

জামালপুরে ভুল চিকিৎসা ও দায়িত্বের অবহেলায় নাসিয়া আক্তার (৭০) নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সঠিক চিকিৎসা না দেওয়া ও দায়িত্বের অবহেলায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ স্বজনদের। তবে রোগী হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) পৌর শহরে জামালপুর ডায়াবেটিস জেনারেল হাসাপাতালে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর বিকালে পায়ে ফোঁড়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন নাসিয়া আক্তার। ওই দিনই তার পায়ে অস্ত্রোপচার করা হয়।

নিহত নাসিয়া আক্তার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার খরমা দিঘলকান্দি এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমানের স্ত্রী।

হাসপাতাল ও পরিবার সূত্র জানায়, নসিয়া আক্তার ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন। গত ৯ সেপ্টেম্বর বিকালে পায়ের সমস্যা নিয়ে জামালপুর ডায়াবেটিস জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। সে সময় তার শরীরে ডায়াবেটিস ২০ এর ওপরে ছিল। এ অবস্থায় তাঁর পায়ে অস্ত্রোপচার করেন ডা.হাসানুল বারী শিশির। অপারেশনের পর কোনো চিকিৎসক তার আর খোঁজ নেয়নি। এরপর তার অবস্থার অবনতি হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থাগ্রহণ করেননি। কোনো দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক একদিন একবারের জন্যও রোগীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে যায়নি। মৃত্যুর যন্ত্রণায় ছটফট করেন তিনি। পরে দায়িত্বরত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ও নার্সদের বিষয়টি অবগত করা হলে সবকিছু স্বাভাবিক আছে বলে জানান তাঁরা। এক পর্যায়ে তিনি মারা যায়। মৃত্যুর পরেও কোনো চিকিৎসক তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করতেও আসেনি বলে অভিযোগ জানিয়েছেন পরিবারের লোকজন।

নিহত নসিয়া আক্তারের মেয়ের জামাই বেলাল জানান, তার শাশুড়িকে ইচ্ছা করে মেরে ফেলেছে জামালপুর ডায়াবেটিস হাসপাতালের লোকজন। অপারেশনের পর তারা কোনো দায়িত্ব পালন করেননি। দায়সারা ভূমিকা পালন করেছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

নিহতের মেয়ে রেখা মনি জানান, ডায়াবেটিস টেস্ট করার জন্য তার মাকে ডায়াবেটিস হাসপাতালে নিয়ে আসেন তারা। এরপর কম খরচে পায়ের ফোঁড়া অপারেশন করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তার মাকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অপারেশন শেষে কোনো ডাক্তার আর কোনো খোঁজ নেয়নি।

এ বিষয়ে জেলা বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনেস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘রোগীটা মারা গেছে, মহিলা মানুষ, লাশটা আটকে আছে, তাই আগে দাফন কাফনের জন্য লাশটা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আসলে মানবিক কারনে আগে লাশটি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এ নিয়ে আগামীকাল ১১ টায় বসার কথা রয়েছে।’

এ নিয়ে জামালপুর ডায়াবেটিস জেনারেল হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘ডায়াবেটিস হাসপাতালের তিনজন লাইফ মেম্বার ও ক্লিনিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বুলবুল রোগীর স্বজনদের সাথে কথা বলে লাশ পাঠিয়ে দিয়েছেন। আগামীকাল স্বজনদের নিয়ে আবার বসবেন। আর আমরা ডাক্তারদের দিয়ে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। তারা আগামীকাল প্রতিবেদন দেবেন।’

এ বিষয়ে ডা.হাসানুল বারী শিশির বলেন, ‘যে অপারেশন তাতে রোগীর মৃত্যু হওয়ার কোনো কারণ নাই। তবে রোগীটি হার্ট অ্যাটাকে মারা যেতে পারেন।’

এ প্রসঙ্গে জামালপুরের সিভিল সার্জন ডা.মোহাম্মদ আজিজুল হক বলেন, ‘আগামীকাল কাগজপত্র তলব করবো। কাগজপত্র দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।’

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

জেসমিন আক্তারকে ৯ সেপ্টেম্বর গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রায় চার দিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তিনি শুক্রবার সন্ধ্যায় মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর স্বজনেরা মামলা করেন। এরপর আজ ভোরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তোহাকে গ্রেফতার করা হয়েছে

১ ঘণ্টা আগে

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ কে এম নাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ছিল। সেটির পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গত রাতে নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে

২ ঘণ্টা আগে

এ ঘটনায় আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ওয়াজিদুর রহমান মামলা তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন পিবিআইকে। আগামী ৬ নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি

৪ ঘণ্টা আগে

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। একই সঙ্গে হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে

৪ ঘণ্টা আগে