কুষ্টিয়ার বৈষম‍্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছয়জনের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী মামলায় সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর রিভিউ আবেদন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ খারিজ করে দিয়েছে।

রোববার (৩০ নভেম্বর) এই আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২-এর দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেল, যার নেতৃত্ব দেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ। প্যানেলের অন্য সদস্য ছিলেন জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

এর আগে, সকালেই ইনুকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়, যাতে প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করা যায়। উপস্থিতি নিয়ে তিনি কাভার্ড ভ্যান থেকে হাসতে হাসতে নামেন। একই দিনে ট্রাইব্যুনালের তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলও মামলার প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য গ্রহণ শুরু করে।

এই মামলায় ২ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল-২ ইনুর বিরুদ্ধে আটটি অভিযোগ গঠন করে। ২৫ সেপ্টেম্বর প্রসিকিউশন সুনির্দিষ্ট অভিযোগসহ ইনুকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে এবং ৩৯ পৃষ্ঠার ফরমাল চার্জ দাখিল করে। সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে এবং তিনটি অডিও ও ছয়টি ভিডিও প্রমাণ হিসেবে প্রোডাকশন করা হয়েছে।

হাসানুল হক ইনু ২০২২ সালের ২৬ আগস্ট রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার হন। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন মামলায় কারাগারে রয়েছেন। সাবেক তথ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি কুষ্টিয়ায় জোট প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করলেও হেরে যান।

মামলার ঘটনায় জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় কুষ্টিয়া শহরে শহীদ হন শ্রমিক আশরাফুল ইসলাম, সুরুজ আলী বাবু, শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মুস্তাকিন, উসামা, ব্যবসায়ী বাবলু ফরাজী ও চাকরিজীবী ইউসুফ শেখ। এতে আহত হন আরও বহু নিরীহ মানুষ। তদন্ত শেষে উসকানি, ষড়যন্ত্রসহ সুনির্দিষ্ট আটটি অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়।

এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হওয়ায় আদালতের কার্যক্রমে নতুন দিক খুলেছে, এবং দেশের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ মানবতাবিরোধী বিচার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।