শেরপুর সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক পদে দায়িত্ব পালন করছেন হজরত আলী। তিনি এর আগে শেরপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু প্রমোশন না হয়ে সেখানে তার বিশাল ডিমোশন হয়েছে। এতে সহজেই বুঝা যায় একজন রাজনৈতিক নেতা কতটা দেউলিয়া হলে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক থেকে তাকে এখন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক পদে দায়িত্ব পালন করতে হয়। অথচ এতে তার কোনো মানইজ্জত নষ্ট হয়নি। হজরত আলীর এই পদ পদবীর বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন তার আইনজীবী মো: তোফাজ্জল হোসেন রুমেল।

এদিকে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অন্তত এক যুগ আগে ভুয়া কাগজপত্রে পাস হওয়া এলসির ১০ লাখ ডলারের সুদ হিসাব করে প্রায় ৩০ লাখ ডলার ছাড় করাতে বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করেন হলমার্ক কেলেঙ্কারির সময় ধরা পড়া আরেক ব্যাংক জালিয়াত প্রতিষ্ঠান রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ। টাকা ছাড়াতে আবেদন করা হয় সোনালী ব্যাংকেও। তবে একযুগ পরে সোনালী ব্যাংকও কোম্পানিটির দেওয়া কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে। এতে পুরো কাগজপত্র নকল ও জাল ধরা পড়ে।

পরে সোনালী ব্যাংক জালিয়াতির বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দিয়ে অবহিত করেন। এই টাকা ছাড় হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সোনালী ব্যাংক এমন একটি নোটও দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে সায় না দিয়ে উলটো বাংলাদেশ ব্যাংক ওই জাল কাগজের এলসি অনুমোদন করে দ্রুত টাকা ছাড় করতে সোনালী ব্যাংকে চাপ দেন। ফোন করে ব্যাংকের চেয়ারম্যানকেও প্রক্রিয়া শেষ করতে বলা হয়। দেখানো হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি সহায়তা প্যাকেজের অজুহাত। তবে ব্যাংক সূত্র বলছে, এটা কোনোভাবেই নীতি সহায়তা প্যাকেজের আওতায় পড়ে না। এটা পুরোটাই জালিয়াতি।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, জালিয়াতির জন্য তার প্রতিষ্ঠান রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। সোনালী ব্যাংক কর্তৃক বাংলাদেশ ব্যাংককে মোকাবিলায় বিবাদী ও সংশ্লিষ্ট পক্ষকে বিবাদী করে দায়ের করা ৩৪টি মানি-স্যুট মামলা হয়। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সোনালী ব্যাংক পিএলসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর শওকত আলী খান সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের অডিটে রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজের জাল-জালিয়াতি ধরা পড়েছে এটা সত্য। এলসি খোলার সময় তার যে সমস্ত কাগজপত্র দিয়েছেন, তার পুরোটাই ভুয়া এবং নকল। তাই আমরা বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকে জানিয়েছি। অথচ এত বড়ো ব্যাংক কেলেঙ্কারি ধরা পরার পরও হজরত আলীর মান ইজ্জত নষ্ট হয়নি।

যখন সাংবাদিকরা এসব তথ্য যাচাই বাছাই করে তার বক্তব্যসহ সংবাদ প্রকাশ করা হয় এরপর নাকি তার সম্মানের হানী হয়েছে। নষ্ট হয়েছে ইজ্জত। তাই তিনি এখন নানাভাবে সাংবাদিকদের ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া অব্যাহত রেখেছেন।