নৌকা ডুবির পর রাজশাহী বিএনপিতে নতুন নেতৃত্ব

প্রতিনিধি
রাজশাহী
আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১৯: ৪৮
Thumbnail image
ছবি: প্রতিনিধি

চার বছর পর রাজশাহী মহানগর বিএনপিতে ঘোষণা হলো আংশিক কমিটি। ২০২১ সালের আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈসা ও সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুন। দীর্ঘ স্থবিরতা ও নেতৃত্ব সংকট পেরিয়ে নতুন কমিটিতে ফের প্রাণ ফিরেছে রাজশাহী বিএনপিতে।

গত চার বছরে কয়েকজন নেতা ত্যাগ ও সংগ্রামের রাজনীতি চালিয়েছেন। কিন্তু ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের নৌকা ডুবির পর বিএনপিতে অসংখ্য নতুন মুখ যোগ দেন। পুরনো কর্মীদের অভিযোগ, তাদের মধ্যে অনেকে আন্দোলন-সংগ্রামের সময় দেখা যায়নি, যদিও তারা নিজেদের ‘ত্যাগী নেতা’ হিসেবে পরিচয় দেন। এসব নবাগত নেতাদের অনেককে ‘হাইব্রিড নেতা’ বলা হয়। অভিযোগ রয়েছে, কেউ কেউ দখলবাজি, চাঁদাবাজি, পদবাণিজ্য ও আওয়ামী লীগের দোসরদের আশ্রয় দেওয়ার মতো কাজে জড়িত হন। এর ফলে রাজশাহী মহানগর বিএনপি ৩–৪টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে, একে অপরের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন এবং কেন্দ্রে অভিযোগ পাঠানোর ঘটনা ঘটেছে।

পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে কেন্দ্রীয় বিএনপি সিদ্ধান্ত নেয়—রাজশাহীকে আবার ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। একসময় যেভাবে জনাব মিজানুর রহমান মিনু রাজশাহীর বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছিলেন, সেই ঐক্য ফিরিয়ে আনাই এখন লক্ষ্য।

দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন,রাজশাহী একসময় বিএনপির শক্ত ঘাঁটি ছিল। সামনে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এখানকার নেতাকর্মীদের ঐক্য ফিরিয়ে আনতে আমরা নতুন কমিটি দিয়েছি। এই কমিটি রাজশাহীতে আবারও বিএনপির শক্ত অবস্থান ফিরিয়ে আনবে।

দলনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও রাজশাহীর সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু বলেন,দীর্ঘদিন পর ত্যাগী নেতাদের নিয়ে সুন্দর একটি কমিটি ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্র। এখন এই কমিটির সকলের দায়িত্ব হবে নিঃস্বার্থভাবে দলের জন্য কাজ করা এবং আংশিক কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রূপ দেওয়া।

রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ বলেন,কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে আমরা আনন্দিত। মহানগর বিএনপির নতুন নেতৃত্বের ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। তারা বিভাজন দূর করে রাজশাহীতে বিএনপিকে পুনরায় ঐক্যবদ্ধ করবে।

সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন বলেন, আমাদের সামনে তিনটি চ্যালেঞ্জ— দলীয় ঐক্য ফিরিয়ে আনা, সাংগঠনিক পুনর্গঠন সম্পন্ন করা এবং রাজশাহীর আন্দোলনমুখী রাজনীতি আবার সক্রিয় করা। এই লক্ষ্য নিয়েই আমরা মাঠে নামব।

সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রিটন বলেন,“দীর্ঘদিনের স্থবিরতা ও বিভাজন আমাদের রাজনীতিকে পিছিয়ে দিয়েছিল। আমরা চাই সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে। এখন আর কাউকে বাদ নয়, সবাই রাজশাহীর বিএনপির ঘরে ফিরবে।

তিনি আরো বলেন,দলের সবার ভেদাভেদ কাটিয়ে দেশনায়ক তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা দাবিকে বাস্তবায়নে রাজশাহী মহানগরে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করব। সামনে নির্বাচনে আমরা এই ৩১ দফাকে সামনে রেখে জনগণের ভোটাধিকার ও নিরাপত্তা ফিরিয়ে দিতে চাই। বর্তমানে দেশের পরিস্থিতিতে জনগণের নিরাপত্তা খুবই জরুরি, আর সেটা নিশ্চিত করতে পারবে কেবল বিএনপি।

রাজশাহীর স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই আংশিক কমিটি যদি বিভাজনের রাজনীতি পেরিয়ে তৃণমূলকে একত্র করতে পারে, তবে রাজশাহী আবারও বিএনপির ঐতিহ্যবাহী ঘাঁটি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

বিএনপি নিয়ে আরও পড়ুন

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর ঠাকুরগাঁও জেলা কমিটির উদ্যোগে সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক উত্তরণ নিয়ে একটি গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

২ দিন আগে

শেরপুর সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক পদে দায়িত্ব পালন করছেন হজরত আলী। তিনি এর আগে শেরপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু প্রমোশন না হয়ে সেখানে তার বিশাল ডিমোশন হয়েছে। এতে সহজেই বুঝা যায় একজন রাজনৈতিক নেতা কতটা দেউলিয়া হলে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক থেকে তিনি এ

২ দিন আগে

রাজশাহী সদর (রাজশাহী-২) আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রহমান মিনু সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজশাহীর আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। মিনুর পক্ষে মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেন মহানগর বিএনপির নেতারা।

২ দিন আগে

গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) গাজীপুরের টঙ্গীস্থ আহসান উল্লাহ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, গাজীপুর-২ আসনের বর্তমান মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করা হোক।

২ দিন আগে