আন্দোলনে কাঁপছে রাজধানী

প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯: ২১
Thumbnail image

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশত্যাগ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। কোটা সংস্কার থেকে দেশ সংস্কারে উজ্জীবিত সে আন্দোলনে হতাহতের সংখ্যা সহস্রাধিক মানুষ। রক্তাক্ত রাজপথের লাল রঙ এখনো না মুছলেও, নতুন সরকারের কঠিন সময়ে রাজপথে নামছেন কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী। দাবি আদায়ের চাপ দিয়ে বেকায়দায় ফেলছেন সরকারকে।

রোববার (০২ ফেব্রয়ারি) আন্দোলনে নামে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা এবং জুলাই আন্দোলনে আহতরা । তার রাজধানীর শ্যামলী ও মহাখালী এলাকায় আবস্থান নেয়। ফলে রাজধানী জুড়ে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের এবং চড়ম ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী।

গত কয়েকদিন ধরেই স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে সড়কে রয়েছেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের সড়ক অবরোধের কারণে কয়েকদিন ধরেই ব্যাপক ভোগান্তি হচ্ছে। রোববারও মহাখালীতে কলেজটির ক্যাম্পাসের সামনের সড়ক বাঁশ দিয়ে অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা।

তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবি অযৌক্তিক জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, তা মেনে নেওয়া হবে না। রোববার রাজধানীর এনইসিতে একনেক সভা শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি একথা বলেন।

এদিকে শিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন জারি রাখার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

তিতুমীর কলেজের আন্দোলনরত রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল হামিদ বলেন, ‘শিক্ষা উপদেষ্টার আজকের বক্তব্য সম্পূর্ণ দ্বিচারিতা এবং আগের কথার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’ উপদেষ্টার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে সামনে আরো কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণা আসবে, আমরা সেই অপেক্ষায় বসে ছিলাম। আমাদের ভাইয়েরা মৃত্যুশয্যায় আছে। অনশনগত সবার অবস্থা খারাপ। এমন অবস্থাতেও উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গে ঠাট্টা-তামাশা করছেন।এর জবাব তাদের দিতে হবে।’

শিক্ষা উপদেষ্টা ৩৫ হাজার শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ করে নাসরিন আক্তার নামের তিতুমীর কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এর উপযুক্ত জবাব আমরা দেব। আমরা এর চেয়ে কঠিন আন্দোলন গড়ে তুলব। তিতুমীরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাওয়া না পর্যন্ত আমরা সড়ক ছাড়ব না।

এদিকে, সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে মিরপুর সড়ক অবরোধকারী জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা সচিবালয় অভিমুখে তাঁদের যাত্রা স্থগিত করেছেন। স্বীকৃতির দাবিতে শিশুমেলার মোড়েই তাঁরা অবস্থান করবেন বলে জানিয়েছেন।

রোববার সকাল থেকে রাজধানীর আগারগাঁও ও দুপুর থেকে মিরপুর সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত বেশ কয়েকজন। এতে মিরপুর সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে।

বেলা আড়াইটার দিকে মিরপুর সড়ক অবরোধ করে রাখা আহতদের মধ্যে সোহেলী নামে এক নারী দাবি মেনে নিতে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়ার ঘোষণা দেন।

শ্যামলীতে শিশুমেলার সামনে পদচারী সেতুর কাছে কামরুল নামে এক ব্যক্তির গলায় রশি দেখা গেছে। তিনি বলেছেন, বিকেল ৪টার মধ্যে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না দিলে আত্মহত্যা করবেন। তাঁর গলায় ‘হয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, না হয় আত্মহত্যা!’ লেখা পোস্টার ঝুলিয়ে রাখতে দেখা যায়।

এর আগে সকালে রাজস্ব ভবন থেকে শুরু করে টিবি হাসপাতালের রাস্তা বন্ধ করে দেন আহত বেশ কয়েকজন। এখানে শনিবার সন্ধ্যা থেকেই তাঁরা অবস্থান নিয়েছিলেন বলে জানান।

সকালে আগারগাঁওয়ে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়কে অবস্থান নেন আহত ব্যক্তিরা। এসব এলাকা দিয়ে যানবাহন যেতে দেওয়া হয়নি। রোগী বা অ্যাম্বুলেন্স দেখে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ অবস্থায় এই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আশপাশে দেখা দেয় যানজট।

চিকিৎসাসেবা ঠিকমতো পাচ্ছেন না—এমন অভিযোগ করে রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের ভেতর বিক্ষোভ দেখান জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে আহত এই ব্যক্তিরা। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। রাতেও বিক্ষোভ চলে।

বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ রাস্তার মাঝে চাদর বিছিয়ে শুয়েছেন। রাস্তার মাঝে বেঞ্চ পেতেও বসেছেন অনেকে। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে সহায়তা পাওয়ার প্রক্রিয়া ধীরগতির; তা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

বিশেষ সংবাদ নিয়ে আরও পড়ুন

মুতা বিয়ার নামে কুমারীদের ইজ্জত নষ্ট করছে ধনাঢ্য এক শিল্পপতি। টানা ২০ বছর ধরে খোদ রাজধানীতে এ অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন তিনি। সব কিছু হারিয়ে তথ্য প্রমাণ থাকার পরও লোক লজ্জার ভয়ে বিচার চাইতে পারেনি ভুক্তভোগী নারীরা।

১৪ দিন আগে

নিবন্ধন অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিআর) খান মো. আব্দুল মান্নান এর পাশে এখন আর কেউ নেই। আদালত খান মো. আব্দুল মান্নান ও তার স্ত্রী সাকিলা বেগমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্লকের আদেশ দেয়ার পর একদিনেই পরিস্থিতি একেবারে পাল্টে গেছে।

২০ দিন আগে

হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে গড়ে তোলা শিল্পকারখানা নিয়ে এখন চরমভাবে শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরা। জ্বালানি সংকট, ঋণের উচ্চ সুদহার, ডলার সংকট, নিরাপত্তাহীনতা, মামলা-হামলাসহ নানান রকম সংকটে ব্যবসায়ীরা। চরম গ্যাস ও ব্যাংকিং সংকটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশের কল-কারখানাগুলো।

১৮ মে ২০২৫

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিসরির বরাতে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানের ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস (ডিজিএমও) একমত হয়েছেন— উভয়পক্ষই বিকাল ৫টা থেকে স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে সব ধরনের সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করবে।

১০ মে ২০২৫