খায়রুল হকের রায়ে ছিল ধারাবাহিক ত্রুটি

প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিবেদক
Thumbnail image
ছবি: সংগৃহীত

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) এক ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেছে, যা ১৪ বছর আগে দেওয়া ত্রয়োদশ সংশোধনের মাধ্যমে প্রবর্তিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে পুরোপুরি বাতিলের সিদ্ধান্তকে পুনর্বিবেচনা করে।

আপিল বিভাগের নতুন রায়ে পূর্বের রায়টি সম্পূর্ণরূপে রিভিউ করা হয়েছে এবং সর্বসম্মতভাবে নতুন সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। এই রায়ের মাধ্যমে সংবিধানের সেই প্রক্রিয়া পুনরায় কার্যকর হয়েছে যা বাংলাদেশের জনগণকে নিরপেক্ষ ভোটাধিকার নিশ্চিত করেছিল।

বিএনপির আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল সংবাদ সম্মেলনে এ রায়কে সার্বজনীন গুরুত্বের হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, “সাতজন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত আপিল বিভাগে চারজন বিচারপতির মতামত ছিল নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পক্ষে, আর তিনজন বিচারপতির নেতৃত্বে যেসব ভুল যুক্তি ছিল, সেগুলো রিভিউ করে এখন এক সর্বসম্মত রায় প্রকাশ করা হয়েছে।” ব্যারিস্টার কাজল আরও বলেন, “এটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার সংক্রান্ত সর্বশেষ সুপ্রিম কোর্টের রায়, যা দেশের সংবিধান, আইন ও বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ।”

তিনি স্মরণ করান, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার কারণে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং এর কিছু বিচ্যুতি থাকলেও ২০০৮ সালের নির্বাচনে মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পেরেছিল। এই ব্যবস্থার পুনরায় স্বীকৃতির মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণ তাদের ভোটাধিকারে ফিরে এসেছে।

ব্যারিস্টার কাজল উল্লেখ করেন, “যে কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনের মাধ্যমে বিলুপ্ত করা হয়েছিল, তার ফলে বর্তমান সরকারের সময়ে জনগণ ভোটাধিকারের পূর্ণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বর্তমান রায়ের মাধ্যমে সেই বৈধ ব্যবস্থা পুনরায় সংবিধানে ফিরিয়ে আনা হয়েছে, যা গণতন্ত্রের বিকাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

রায়ে বলা হয়েছে, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়, এটি দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করার একটি মৌলিক কাঠামো। এই রায় প্রমাণ করে যে সংবিধান এবং আইনমতে জনগণের ভোটাধিকার সুরক্ষিত করা সরকারের এবং সমাজের দায়িত্ব। আদালতের এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে, যা ভবিষ্যতের নির্বাচন ও সংবিধান সংক্রান্ত সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করবে।

ব্যারিস্টার কাজল বলেন, “নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত এই সর্বশেষ রায় শুধু আইনগত দিক থেকে নয়, বরং জনগণের রাজনৈতিক অধিকার পুনঃস্থাপনের দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি নিশ্চিত করে যে, জনগণ শান্তিপূর্ণ এবং স্বচ্ছভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে, যা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ভিত্তি।”

এই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক ও আইনগত বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশে ভোটাধিকার, সংবিধান সংক্রান্ত নীতি এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া পুনরায় স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হওয়ার দিকে আরও দৃঢ়ভাবে এগোতে পারবে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

জেলা নিয়ে আরও পড়ুন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে শিপন ও ইয়াছিন হত্যার ঘটনায় দায়িত্বরত পাল্টা মামলায় নতুন গ্রেফতারের খবর পাওয়া গেছে

৩২ মিনিট আগে

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) এক ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেছে, যা ১৪ বছর আগে দেওয়া ত্রয়োদশ সংশোধনের মাধ্যমে প্রবর্তিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে পুরোপুরি বাতিলের সিদ্ধান্তকে পুনর্বিবেচনা করে

১ ঘণ্টা আগে

জামালপুরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে ৫ম দিন ধরে প্রভাষকদের কর্মবিরতি চলছে

২ ঘণ্টা আগে

বিভিন্ন অনিয়ম, তদবির ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে আলোচনায় থাকা খুলনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাছলিমা আক্তারকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে

২ ঘণ্টা আগে