বোরহানউদ্দিনে ভুয়া নামজারি হোতা দলিল লেখক বাবুল

প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ০১
Thumbnail image
ছবি: প্রতিনিধি

ভোলার বোরহানউদ্দিনে ভুয়া নামজারি ও দাখিলা তৈরি করে দাতা, গ্রহীতার জমির দলিল রেজিস্ট্রি করার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে একটি চক্র। আর এই চক্রের প্রধান সদস্য বোরহানউদ্দিন সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক মোঃ বাবুল।

সূত্রে মতে জানা গেছে, এসব অপকর্ম কারণে সে কিছুদিন পূর্বে জেল খেটেছে এক মাস এবং বর্তমানে তার বিরুদ্ধে দুইটি মামলা চলমান রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সম্প্রতি গত ২৪ জুলাই একটি ভুয়া নামজারি ও দাখিলা দিয়ে দেউলা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের দাতা-নাহিদুল ইসলাম গংদের থেকে ২০ হাজার টাকা ও দেউলা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের গ্রহীতা হাফিজ মৃধার কাছ থেকে সাড়ে ৪২ হাজার টাকা নিয়ে বোরহানউদ্দিন সাব-রেজিস্ট্রার মোঃ রফিকুল ইসলামকে দিয়ে একটি ভুয়া দলিল রেজিস্ট্রি করে দেয় এ আলোচিত প্রতারক বাবুল। দলিল নং-২৮৪৫।

এ ব্যাপারে বোরহানউদ্দিন সাব-রেজিস্ট্রার মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, দৈনিক অনেকগুলো জমির রেজিস্ট্রি করতে হয়। সব কিছু খতিয়ে দেখার সময় তার হয় না এবং তিনি দলিল লেখকদের অনেক বিশ্বাস করেন।

এ ব্যাপারে দাতা নাহিদুল ইসলাম গং জানায়, তারা জমি বিক্রির জন্য দলিল লেখক বাবুলকে নামজারি ও খাজনা দাখিলার কোন কাগজ দেয়নি। বাবুল কোথা থেকে এ ভুয়া নামজারি ও দাখিলা পেয়েছে তা তারা জানে না। তবে বাবুল তাদের থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছে।

গ্রহীতা হাফেজ মৃধা জানান, আমি দলিল লেখক বাবুলকে বিশ্বাস করেছিলাম এবং সে আমার থেকে সাড়ে ৪২ হাজার টাকা নিয়েছে। সে যে আমার সাথে এত বড় বিশ্বাসঘাতকতা করবে তা আমার জানাছিল না।

দেউলা ভূমি অফিসের তহশিলদার বজলুর রহমান বলেন, সে তার অফিস থেকে এ নামজারি ও খাজনার দাখিলা জমির দাতাকে প্রদান করেননি এবং তার অফিসে ভূমি মন্ত্রণালয়ের কম্পিউটারে এ নামজারি ও দাখিলার কোন প্রমাণ সংরক্ষিত নাই।

বোরহানউদ্দিনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান ও জেলা সাব-রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ মোঃ নুর নেওয়াজ জানান, বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখবেন এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ওই এলাকার সচেতন মহল জানান, দলিল লেখক বাবুল ইউনিয়ন তহশিলদার ও সাবরেজিস্ট্রারের জোগসাজসে দীর্ঘদিন যাবৎ এ অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। বাবুল ভুয়া নামজারি ও দাখিলা তৈরি চক্রের একজন অন্যতম সদস্য। একটি দলিল রেজিস্ট্রিতে যদি নামজারি ও দাখিলা ভুয়া থাকে তবে ওই জমিটি গ্রহীতা স্থায়ী ভাবে কোন দিনও ভোগ করতে পাবে না। একটা সময় এ জমির সমস্যা দেখা দিবেই। দলিল লেখক বাবুল মোটা অঙ্কের টাকার লোভে দীর্ঘ দিন যাবৎ এ অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। বাবুলের প্রতারণার জালে আটকা পরে এ পর্যন্ত সর্বস্বান্ত হয়েছে বোরহানউদ্দিনের অনেক মানুষ। প্রতারণার দায়ে সে কিছু দিন আগে জেল খেটে বের হয়েছে। বর্তমানেও তার বিরুদ্ধে ২টি প্রতারণা মামলা চলমান রয়েছে। বাবুল দলিল লেখক সমিতির প্রভাবশালী নেতা, সাব-রেজিস্ট্রার ও তহশিলদারদের মতো কর্মকর্তাদের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন যাবৎ বীরদর্পে এ অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে ।

অভিযুক্ত দলিল লেখক বাবুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দাতা ও গ্রহীতা আমাকে যে নামজারি ও দাখিলা দিয়েছে এর ভিত্তিতে আমি দলিল রেজিস্ট্রি করে দিয়েছি। তবে এ জমির দাতা ও গ্রহীতারা জানান, আমরা তাকে কোন নামজারি ও দাখিলা দেইনি। দিয়েছি শুধু টাকা।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

জেলা নিয়ে আরও পড়ুন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে শিপন ও ইয়াছিন হত্যার ঘটনায় দায়িত্বরত পাল্টা মামলায় নতুন গ্রেফতারের খবর পাওয়া গেছে

২ ঘণ্টা আগে

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) এক ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেছে, যা ১৪ বছর আগে দেওয়া ত্রয়োদশ সংশোধনের মাধ্যমে প্রবর্তিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে পুরোপুরি বাতিলের সিদ্ধান্তকে পুনর্বিবেচনা করে

৩ ঘণ্টা আগে

জামালপুরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে ৫ম দিন ধরে প্রভাষকদের কর্মবিরতি চলছে

৩ ঘণ্টা আগে

বিভিন্ন অনিয়ম, তদবির ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে আলোচনায় থাকা খুলনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাছলিমা আক্তারকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে

৩ ঘণ্টা আগে