মোঃ মাজহারুল পারভেজ

প্রকল্পের প্রধান হোতা প্রকল্প পরিচালক এই উন্নয়ন প্রকল্পের নামে বিগত আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকারের যোগসাজশে প্রাক্কলিত ব্যয় ৫০ কোটি টাকার থাকলেও পরবর্তীতে লুটপাট আর অর্থ আত্মসাতের অঙ্ক বাড়াতে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি করতে করতে ৫০৪ কোটি টাকা বৃদ্ধি করে।
কোনো রকম পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই, ড. জাহাঙ্গীর আলম আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকারের উপর মহলের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ক ক্যাটাগরির এই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের পদ বাগিয়ে নেন।
প্রকল্প পরিচালক হয়েও সম্পূর্ণ বিধিবর্হিভূতভাবে বিভিন্ন সংস্থা হতে গবেষণা প্রকল্পের নামে কোটি টাকারও বেশি ফান্ড গ্রহণ করে পুরো অর্থ একাই আত্মসাৎ করেন।
সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়ায় আসবাবপত্র ক্রয়ে দুর্নীতি করেছেন। ডিপিপিতে সংস্থান না থাকা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু কর্নার নির্মাণের নামে কোটি কোটি টাকার আর্থিক অপচয় করেছেন। ভুয়া আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিকট আত্মীয়স্বজনদের নিয়োগ দিয়েছেন। নির্মাণ কাজ শেষ না করেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিল প্রদান করেছেন। দরপত্র ম্যানিপুলেট করে মাইনাস, ১৯৬ ডিগ্রির ফ্রিজের এবং যন্ত্রপাতি ক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রায় তিন কোটি টাকার ভ্যারিয়েশন থাকা সত্ত্বেও সর্বনিম্ন দরদাতাকে বাদ দিয়ে অর্থের বিনিময়ে পরবর্তী দরদাতাকে কাজ পাইয়ে দেওয়াসহ নানাবিধ আর্থিক দুর্নীতিতে যুক্ত ছিলেন এই আওয়ামী দোসর। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অর্থ আত্মসাৎ আর রাজনৈতিক লুটপাটের নামে জনগণের টাকার এমন চূড়ান্ত অপচয়ের নজিরবিহীন উদাহরণ তৈরি করেছে জাতীয় জীন ব্যাংক স্থাপন প্রকল্প।
১৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে জীন ব্যাংক ভবন, ১৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে অফিসার্স কোয়ার্টার, ৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে স্টাফ অফিসার্স কোয়ার্টার, ৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ডরমেটরি, নির্মাণে চূড়ান্ত অনিয়ম আর কমিশন বাণিজ্য করে প্রত্যেকটি টেন্ডারের কাজ দিয়েছেন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইয়াফেস ওসমানের আত্মীয় স্বজন এবং সাভারের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের।
আর্থিক সম্ভাব্যতা যাচাই না করে প্রকল্প পরিচালক ড. জাহাঙ্গীর আলম কোনো ধরনের দরপত্র আহ্বান না করে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কোনো অনুমোদন গ্রহণ না করে তিনি সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়ায় পাঁচ কোটি সাত লাখ একাত্তর হাজার আটশ সত্তর টাকা মূল্যে ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস অ্যান্ড এর যোগসাজশে আসবাবপত্র ক্রয় করেছেন।
গত ২০২৩ সালের ০৬ এপ্রিলে ক্রয়াদেশ প্রদানের সময়ও তিনি ডিপিপির অনুমোদিত ব্যয় পাঁচ কোটি পঁয়ষট্টি লাখ থাকলেও তিনি পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা লঙ্ঘন করে পাঁচ কোটি ৭১ লাখ, ৮৭ হাজার সাতশত ৬৬ টাকার ক্রয়াদেশ প্রদান করেন।
ডিপিপিতে বঙ্গবন্ধু কর্নারের সংস্থান না থাকলেও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগে সরকারকে খুশি করতে ১২ তলা বিশিষ্ট জীন ব্যাংক ভবনের মাল্টিপারপাস হলের সাথে বঙ্গবন্ধু কর্নার নির্মাণের জন্য কার্যক্রম হাতে নেন। গত ৫ আগস্টের পর রাতারাতি বঙ্গবন্ধু কর্নার নির্মাণের নামে খরচকৃত টাকার খরচ আর উদ্যোগের নথি সব ধামাচাপা দিয়ে দেন। প্রকল্পের পিআইসি এবং পিএসসি সভার রেকর্ড দেখলে তার প্রমাণ পাওয়া যাবে।
এই প্রকল্পের আওতায় বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন-এর নির্মাণ কাজ আওয়ামী সরকারের এক মন্ত্রীর ভাতিজাকে দেওয়া হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চার বছর ধরে সেই সাবস্টেশন এর নির্মাণ কাজ শেষ না করে ফেলে রাখেন। তারপরও প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হলেও উক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনুকূলে বিল পরিশোধ করা হয়। পরবর্তীতে অন্য আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করে। মন্ত্রণালয় হতে বার বার তাগিদ প্রদানের পরও উক্ত কাজটি শেষ করতে তিনি প্রায় ছয় বছরের বেশি সময় নষ্ট করেছেন। এ কারণে জীন ব্যাংক ভবন কোনোরকম তৈরি হলেও, বিদ্যুতের লাইন না দেওয়ার কারণে ২০২১ সাল হতে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে ক্রয়কৃত দেশি-বিদেশি বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয় করে ফেলে রাখা হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ জুন-২০২৫ সাল পর্যন্ত হলেও অদ্যাবধি কোনো যন্ত্রপাতি ইনস্টলেশন ও কমিশন হয়নি।
ড. জাহাঙ্গীর আলম দুর্নীতির করে, ভুয়া আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান আশিক ট্রেডার্সের (ভুয়া লাইসেন্স)-এর মাধ্যমে জীন ব্যাংক প্রকল্পে অযোগ্য লোকদের নিয়োগ প্রদান করেন। বিশেষ করে তার শ্যালক শাহীন-কে কমপিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ দিয়ে তার প্রকল্পের সব আর্থিক দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। প্রকল্পের চেকবুক থেকে শুরু করে অ্যাকাউন্ট সব নিয়ন্ত্রণ করতেন তার এই শ্যালকের মাধ্যমে। এছাড়াও ল্যাব এটেন্ডেন্ট মোতালেব, এনামুল, ড্রাইভার রশীদ থেকে শুরু করে নিয়োগকৃত বেশিরভাগ কর্মকর্তা ও কর্মচারী তার নিকট আত্মীয়। উল্লেখ্য, প্রকল্পের আওতায় নিয়োগযোগ্য ৪টি প্রথম শ্রেণির ও ২টি ২য় শ্রেণির পদ থাকলেও একটিতেও কোনো পাবলিক বা ভালো কোনো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, পাঁচশ চার কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পটি ক” ক্যাটেগরির ভুক্ত হওয়ায় তাঁকে প্রতিষ্ঠানের সব কার্যক্রম হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তিনি এনআইবির সব দায়িত্ব হতে লিখিত অব্যাহতি দিয়ে জাতীয় জীন ব্যাংক স্থাপন” প্রকল্পের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। প্রকল্প পরিচালক হিসেবে ২০১৮ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত পূর্ণদায়িত্ব ভাতা গ্রহণ করেছেন। তারপরও তিনি তথ্য গোপন করে বিধিবর্হিভূতভাবে এই সময়কালের মধ্যে তিনি এবং তার প্রকল্পের উপ-পরিচালক বিভিন্ন সংস্থা হতে কোটি কোটি টাকার গবেষণা প্রকল্পের নামে ফান্ড গ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্স হতে প্রায় এক কোটি টাকার "Diversity of Myxovirus resistant (Mx) gene and its relation with avian influenza infection in poultry” শিরোনামে গবেষণা ফান্ড গ্রহণ করেন। একইসাথে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন হতে প্রায় পঞ্চাশ লাখ টাকার "Study on zoonotic diseases of pets and assessment of risk factors of commonly occurred zoonoses for better management” শিরোনামে আরো একটি গবেষণা ফান্ড গ্রহণ করেন। এসব ফান্ড নিয়ে কোনো গবেষণা কাজ না করেই প্রকল্পের সব অর্থ আত্মসাৎ করছেন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম বিশেষজ্ঞ গবেষক হিসেবে প্রকল্প মূল্যায়ন প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে পুরো গবেষণা প্রতিবেদনটি ভুয়া এবং কোনরূপ গবেষণা না করেই তিনি এই প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তিনি তার প্রতিবেদনে এর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও অনুরোধ করেছেন।
আবার একই সময়ে তিনি অনুমোদন বিহীনভাবে বিভিন্ন থিসিস, স্টুডেন্ট সুপারভাইজ করেছেন, যা সুস্পষ্টভাবে চাকরিবিধির লঙ্ঘন। এসব কাজ করতে গিয়ে তিনি জীন ব্যাংক স্থাপন প্রকল্পের কাজ সময়মতো শেষ না করে প্রকল্পের মেয়াদ বর্ধিত করেছেন। জাতীয় জীন ব্যাংক স্থাপন প্রকল্পটি জুন ২০২১ সালে সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত থাকলেও, একাধিকবার মেয়াদ বৃদ্ধি করে জুন ২০২৫ পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। তারপরও প্রকল্পের অনেক কাজ এখনো বাকী রয়ে গেছে।
শুধুমাত্র অর্থ লুটপাট আর আত্মসাতের উদ্দেশ্যে নেওয়া জাতীয় জীন ব্যাংক স্থাপন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন ল্যাবের জন্য মে-২০২১ সাল হতে ফেব্রুয়ারি-২০২৩ সালের মধ্যে ১৮ কোটি ৭৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকার দেশি- বিদেশি বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হয়। ল্যাবসহ প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা ও দেখভাল করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল নিয়োগ করার জন্য ডিপিপিতে সংস্থান থাকলেও তার অনুমোদন হয়নি।
জিএফ আর- বিধি ১০(১) অনুযায়ী প্রত্যেক সরকারি কর্মকর্তা নিজস্ব অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে যেরূপ সতর্কতা অবলম্বন করার কথা, সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তিনি তেমন সতর্কতা অবলম্বন করেননি। প্রকল্প পরিচালক ড. জাহাঙ্গীর আলম বারবার প্রকল্প সংশোধন করলেও এসব বিল্ডিং তৈরির অপ্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। প্রত্যেক সংশোধনীতে অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্য, প্রকল্প ব্যয় একই আছে এমন দেখিয়ে ফিজিক্যাল এবং প্রাইজ কনটিনজেন্সি হতে দশ থেকে পনেরো কোটি টাকারও বেশি অন্য খাতে স্থানান্তর করেছেন।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ড. জাহাঙ্গীর আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ” আমি এখন আর এ পদে নাই সুতরাং এ বিষয়ে কিছু বলতে চাইনা।

প্রকল্পের প্রধান হোতা প্রকল্প পরিচালক এই উন্নয়ন প্রকল্পের নামে বিগত আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকারের যোগসাজশে প্রাক্কলিত ব্যয় ৫০ কোটি টাকার থাকলেও পরবর্তীতে লুটপাট আর অর্থ আত্মসাতের অঙ্ক বাড়াতে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি করতে করতে ৫০৪ কোটি টাকা বৃদ্ধি করে।
কোনো রকম পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই, ড. জাহাঙ্গীর আলম আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকারের উপর মহলের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ক ক্যাটাগরির এই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের পদ বাগিয়ে নেন।
প্রকল্প পরিচালক হয়েও সম্পূর্ণ বিধিবর্হিভূতভাবে বিভিন্ন সংস্থা হতে গবেষণা প্রকল্পের নামে কোটি টাকারও বেশি ফান্ড গ্রহণ করে পুরো অর্থ একাই আত্মসাৎ করেন।
সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়ায় আসবাবপত্র ক্রয়ে দুর্নীতি করেছেন। ডিপিপিতে সংস্থান না থাকা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু কর্নার নির্মাণের নামে কোটি কোটি টাকার আর্থিক অপচয় করেছেন। ভুয়া আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিকট আত্মীয়স্বজনদের নিয়োগ দিয়েছেন। নির্মাণ কাজ শেষ না করেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিল প্রদান করেছেন। দরপত্র ম্যানিপুলেট করে মাইনাস, ১৯৬ ডিগ্রির ফ্রিজের এবং যন্ত্রপাতি ক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রায় তিন কোটি টাকার ভ্যারিয়েশন থাকা সত্ত্বেও সর্বনিম্ন দরদাতাকে বাদ দিয়ে অর্থের বিনিময়ে পরবর্তী দরদাতাকে কাজ পাইয়ে দেওয়াসহ নানাবিধ আর্থিক দুর্নীতিতে যুক্ত ছিলেন এই আওয়ামী দোসর। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অর্থ আত্মসাৎ আর রাজনৈতিক লুটপাটের নামে জনগণের টাকার এমন চূড়ান্ত অপচয়ের নজিরবিহীন উদাহরণ তৈরি করেছে জাতীয় জীন ব্যাংক স্থাপন প্রকল্প।
১৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে জীন ব্যাংক ভবন, ১৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে অফিসার্স কোয়ার্টার, ৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে স্টাফ অফিসার্স কোয়ার্টার, ৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ডরমেটরি, নির্মাণে চূড়ান্ত অনিয়ম আর কমিশন বাণিজ্য করে প্রত্যেকটি টেন্ডারের কাজ দিয়েছেন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইয়াফেস ওসমানের আত্মীয় স্বজন এবং সাভারের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের।
আর্থিক সম্ভাব্যতা যাচাই না করে প্রকল্প পরিচালক ড. জাহাঙ্গীর আলম কোনো ধরনের দরপত্র আহ্বান না করে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কোনো অনুমোদন গ্রহণ না করে তিনি সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়ায় পাঁচ কোটি সাত লাখ একাত্তর হাজার আটশ সত্তর টাকা মূল্যে ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস অ্যান্ড এর যোগসাজশে আসবাবপত্র ক্রয় করেছেন।
গত ২০২৩ সালের ০৬ এপ্রিলে ক্রয়াদেশ প্রদানের সময়ও তিনি ডিপিপির অনুমোদিত ব্যয় পাঁচ কোটি পঁয়ষট্টি লাখ থাকলেও তিনি পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা লঙ্ঘন করে পাঁচ কোটি ৭১ লাখ, ৮৭ হাজার সাতশত ৬৬ টাকার ক্রয়াদেশ প্রদান করেন।
ডিপিপিতে বঙ্গবন্ধু কর্নারের সংস্থান না থাকলেও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগে সরকারকে খুশি করতে ১২ তলা বিশিষ্ট জীন ব্যাংক ভবনের মাল্টিপারপাস হলের সাথে বঙ্গবন্ধু কর্নার নির্মাণের জন্য কার্যক্রম হাতে নেন। গত ৫ আগস্টের পর রাতারাতি বঙ্গবন্ধু কর্নার নির্মাণের নামে খরচকৃত টাকার খরচ আর উদ্যোগের নথি সব ধামাচাপা দিয়ে দেন। প্রকল্পের পিআইসি এবং পিএসসি সভার রেকর্ড দেখলে তার প্রমাণ পাওয়া যাবে।
এই প্রকল্পের আওতায় বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন-এর নির্মাণ কাজ আওয়ামী সরকারের এক মন্ত্রীর ভাতিজাকে দেওয়া হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চার বছর ধরে সেই সাবস্টেশন এর নির্মাণ কাজ শেষ না করে ফেলে রাখেন। তারপরও প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হলেও উক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনুকূলে বিল পরিশোধ করা হয়। পরবর্তীতে অন্য আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করে। মন্ত্রণালয় হতে বার বার তাগিদ প্রদানের পরও উক্ত কাজটি শেষ করতে তিনি প্রায় ছয় বছরের বেশি সময় নষ্ট করেছেন। এ কারণে জীন ব্যাংক ভবন কোনোরকম তৈরি হলেও, বিদ্যুতের লাইন না দেওয়ার কারণে ২০২১ সাল হতে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে ক্রয়কৃত দেশি-বিদেশি বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয় করে ফেলে রাখা হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ জুন-২০২৫ সাল পর্যন্ত হলেও অদ্যাবধি কোনো যন্ত্রপাতি ইনস্টলেশন ও কমিশন হয়নি।
ড. জাহাঙ্গীর আলম দুর্নীতির করে, ভুয়া আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান আশিক ট্রেডার্সের (ভুয়া লাইসেন্স)-এর মাধ্যমে জীন ব্যাংক প্রকল্পে অযোগ্য লোকদের নিয়োগ প্রদান করেন। বিশেষ করে তার শ্যালক শাহীন-কে কমপিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ দিয়ে তার প্রকল্পের সব আর্থিক দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। প্রকল্পের চেকবুক থেকে শুরু করে অ্যাকাউন্ট সব নিয়ন্ত্রণ করতেন তার এই শ্যালকের মাধ্যমে। এছাড়াও ল্যাব এটেন্ডেন্ট মোতালেব, এনামুল, ড্রাইভার রশীদ থেকে শুরু করে নিয়োগকৃত বেশিরভাগ কর্মকর্তা ও কর্মচারী তার নিকট আত্মীয়। উল্লেখ্য, প্রকল্পের আওতায় নিয়োগযোগ্য ৪টি প্রথম শ্রেণির ও ২টি ২য় শ্রেণির পদ থাকলেও একটিতেও কোনো পাবলিক বা ভালো কোনো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, পাঁচশ চার কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পটি ক” ক্যাটেগরির ভুক্ত হওয়ায় তাঁকে প্রতিষ্ঠানের সব কার্যক্রম হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তিনি এনআইবির সব দায়িত্ব হতে লিখিত অব্যাহতি দিয়ে জাতীয় জীন ব্যাংক স্থাপন” প্রকল্পের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। প্রকল্প পরিচালক হিসেবে ২০১৮ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত পূর্ণদায়িত্ব ভাতা গ্রহণ করেছেন। তারপরও তিনি তথ্য গোপন করে বিধিবর্হিভূতভাবে এই সময়কালের মধ্যে তিনি এবং তার প্রকল্পের উপ-পরিচালক বিভিন্ন সংস্থা হতে কোটি কোটি টাকার গবেষণা প্রকল্পের নামে ফান্ড গ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্স হতে প্রায় এক কোটি টাকার "Diversity of Myxovirus resistant (Mx) gene and its relation with avian influenza infection in poultry” শিরোনামে গবেষণা ফান্ড গ্রহণ করেন। একইসাথে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন হতে প্রায় পঞ্চাশ লাখ টাকার "Study on zoonotic diseases of pets and assessment of risk factors of commonly occurred zoonoses for better management” শিরোনামে আরো একটি গবেষণা ফান্ড গ্রহণ করেন। এসব ফান্ড নিয়ে কোনো গবেষণা কাজ না করেই প্রকল্পের সব অর্থ আত্মসাৎ করছেন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম বিশেষজ্ঞ গবেষক হিসেবে প্রকল্প মূল্যায়ন প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে পুরো গবেষণা প্রতিবেদনটি ভুয়া এবং কোনরূপ গবেষণা না করেই তিনি এই প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তিনি তার প্রতিবেদনে এর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও অনুরোধ করেছেন।
আবার একই সময়ে তিনি অনুমোদন বিহীনভাবে বিভিন্ন থিসিস, স্টুডেন্ট সুপারভাইজ করেছেন, যা সুস্পষ্টভাবে চাকরিবিধির লঙ্ঘন। এসব কাজ করতে গিয়ে তিনি জীন ব্যাংক স্থাপন প্রকল্পের কাজ সময়মতো শেষ না করে প্রকল্পের মেয়াদ বর্ধিত করেছেন। জাতীয় জীন ব্যাংক স্থাপন প্রকল্পটি জুন ২০২১ সালে সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত থাকলেও, একাধিকবার মেয়াদ বৃদ্ধি করে জুন ২০২৫ পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। তারপরও প্রকল্পের অনেক কাজ এখনো বাকী রয়ে গেছে।
শুধুমাত্র অর্থ লুটপাট আর আত্মসাতের উদ্দেশ্যে নেওয়া জাতীয় জীন ব্যাংক স্থাপন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন ল্যাবের জন্য মে-২০২১ সাল হতে ফেব্রুয়ারি-২০২৩ সালের মধ্যে ১৮ কোটি ৭৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকার দেশি- বিদেশি বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হয়। ল্যাবসহ প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা ও দেখভাল করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল নিয়োগ করার জন্য ডিপিপিতে সংস্থান থাকলেও তার অনুমোদন হয়নি।
জিএফ আর- বিধি ১০(১) অনুযায়ী প্রত্যেক সরকারি কর্মকর্তা নিজস্ব অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে যেরূপ সতর্কতা অবলম্বন করার কথা, সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তিনি তেমন সতর্কতা অবলম্বন করেননি। প্রকল্প পরিচালক ড. জাহাঙ্গীর আলম বারবার প্রকল্প সংশোধন করলেও এসব বিল্ডিং তৈরির অপ্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। প্রত্যেক সংশোধনীতে অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্য, প্রকল্প ব্যয় একই আছে এমন দেখিয়ে ফিজিক্যাল এবং প্রাইজ কনটিনজেন্সি হতে দশ থেকে পনেরো কোটি টাকারও বেশি অন্য খাতে স্থানান্তর করেছেন।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ড. জাহাঙ্গীর আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ” আমি এখন আর এ পদে নাই সুতরাং এ বিষয়ে কিছু বলতে চাইনা।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, সরকারি কর্মচারীদের নতুন পে কমিশনের সিদ্ধান্ত আগামী নির্বাচিত সরকার নেবে। তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে।
১ দিন আগে
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনের বিলম্বের কোনো কারণ নেই এবং সরকার নির্বাচনের আয়োজন নিয়ে সম্পূর্ণ বদ্ধপরিকর
১ দিন আগে
সরকার জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ আমলে অনুষ্ঠিত পরপর তিনটি জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ সদস্যদের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব দেওয়া হবে না। কিন্তু বাস্তবে এমন পুলিশ সদস্য পাওয়া যাচ্ছে না, যিনি ওই তিন নির্বাচনের কোনো একটিতে দায়িত্ব পালন করেননি
১ দিন আগে
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর দেশের সব উপজেলা সরকারি হাসপাতালে সাপের কামড়ের অ্যান্টিভেনম পর্যাপ্তভাবে সরবরাহ নিশ্চিত করতে সিভিল সার্জনদের নির্দেশ দিয়েছে
২ দিন আগেফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে "জাতীয় জীন ব্যাংক স্থাপন প্রকল্পের নামে ৫শ কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনার অধীনে গবেষণা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি গত ৫ বছরেও এই প্রকল্প শেষ করতে পারেনি
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, সরকারি কর্মচারীদের নতুন পে কমিশনের সিদ্ধান্ত আগামী নির্বাচিত সরকার নেবে। তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনের বিলম্বের কোনো কারণ নেই এবং সরকার নির্বাচনের আয়োজন নিয়ে সম্পূর্ণ বদ্ধপরিকর
সরকার জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ আমলে অনুষ্ঠিত পরপর তিনটি জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ সদস্যদের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব দেওয়া হবে না। কিন্তু বাস্তবে এমন পুলিশ সদস্য পাওয়া যাচ্ছে না, যিনি ওই তিন নির্বাচনের কোনো একটিতে দায়িত্ব পালন করেননি