খুলনা জেলা পরিষদের পাঠানো একটি প্রশাসনিক প্রস্তাবনায় ১৬ ডিসেম্বরকে ‘স্বাধীনতা দিবস’ হিসেবে উল্লেখ করায় স্থানীয় সরকার বিভাগে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিষয়টি দেশীয় জাতীয় দিবস সম্পর্কিত মৌলিক ভুল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। প্রস্তাবটি গল্লামারী গণহত্যা স্মৃতিসৌধের মেরামত কাজের প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল।

২ ডিসেম্বর ২০২৫ (১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২) তারিখে স্থানীয় সরকার বিভাগের জেলা পরিষদ শাখা থেকে উপসচিব খোন্দকার ফরহাদ আহমদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, প্রস্তাবে প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয়, অর্থবছরের প্রকার, এবং এডিপি নাকি রাজস্ব খাতের অর্থ ব্যবহার করা হবে—এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এছাড়া জেলা পরিষদ সভার কার্যবিবরণীতে অনুমোদিত ব্যয়, কারিগরি প্রতিবেদনে সম্ভাব্য কাজের ধরন, প্রকল্প ব্যয়, দর ও পরিমাণ—কোনো তথ্যই পাওয়া যায়নি। ফলে প্রস্তাবটি প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য সম্পূর্ণ অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

তবে সবচেয়ে বিতর্কিত বিষয় হলো ১৬ ডিসেম্বরকে ‘স্বাধীনতা দিবস’ হিসেবে উল্লেখ করা। দেশের সর্বত্র ২৬ মার্চ উদযাপিত হয় জাতীয় স্বাধীনতা দিবস, আর ১৬ ডিসেম্বর পালিত হয় বিজয় দিবস। মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এই ভুলকে ‘অজ্ঞতাজনিত গুরুতর ত্রুটি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

প্রস্তাবনায় স্বাক্ষরকারী খুলনা জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার। তিনি বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ৩১তম ব্যাচের কর্মকর্তা এবং বর্তমানে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন। তাসলিমা আক্তারের প্রশাসনিক দক্ষতা নিয়েও আলোচনার ঝড় উঠেছে, বিশেষ করে গত ১৯ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গা জেলায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে বদলি করা হয়েছিল। চার দিন পরই ২৩ নভেম্বর তার বদলি স্থগিত হওয়ায় বিষয়টি আরও বিবেচনার যোগ্য হয়ে উঠেছে।

গল্লামারী গণহত্যা স্মৃতিসৌধের মেরামত প্রকল্প স্থানীয়ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাবে প্রশাসনিক অনুমোদন আটকে গেছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ জেলা পরিষদকে ত্রুটিপূর্ণ প্রস্তাব সংশোধন করে পূর্ণাঙ্গ ও স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রকল্প প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছে। উপসচিব আরও উল্লেখ করেছেন, ভবিষ্যতে নির্ভুল প্রস্তাব পাঠানোর জন্য অধিক যত্নশীল হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলো।

এ ঘটনায় তাসলিমা আক্তারের প্রশাসনিক দক্ষতা নিয়ে দপ্তরভিত্তিক আলোচনা ও সমালোচনা নতুন করে শুরু হয়েছে।