পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে

প্রতিনিধি
অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image
ছবি: সংগৃহীত

চলতি বর্ষা মৌসুম ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে পাকিস্তানে । জুনের শেষ দিক থেকে শুরু হওয়া টানা ভারী বর্ষণে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২০২ জনের, যাদের মধ্যে ৯৬ জনই শিশু। শনিবার (১৯ জুলাই) এই তথ্য জানিয়েছে দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ)।

সরকারি হিসাবে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঞ্জাব প্রদেশ, যেখানে মৃত্যু হয়েছে ১২৩ জনের। খাইবার পাখতুনখাওয়ায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪০ জন, সিন্ধু প্রদেশে ২১ জন, বেলুচিস্তানে ১৬ জন এবং ইসলামাবাদ ও আজাদ কাশ্মীরে একজন করে মারা গেছেন।

মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই মারা গেছেন ঘরবাড়ি ধসে পড়ে বা ভূমিধসের কারণে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, ১১৮ জন নিহত হয়েছেন ঘর ধসে, ৩০ জন আকস্মিক বন্যায় এবং বাকিরা ডুবে যাওয়া, বজ্রপাত, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট বা ভূমিধসে প্রাণ হারিয়েছেন। এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৬০ জন মানুষ আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৮২ জন শিশু।

রাওয়ালপিন্ডিতে আকস্মিক বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ধামিয়াল, হাতি চক ও মর্গাহসহ পুরো এলাকা তলিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। টেঞ্চ ভাটা ও ফৌজি কলোনির মতো এলাকাগুলোতে পানির উচ্চতা এতটাই বেড়ে যায় যে অনেক জায়গায় তা ছাদ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ফেলে রেখে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান।

ফয়সালাবাদেও ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ভয়াবহ। গত দুই দিনে শহরটিতে ৩৩টি দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ১১ জনের এবং আহত হয়েছেন অন্তত ৬০ জন। অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে দুর্বল অবকাঠামো ধসে পড়ার কারণে। অনেক পরিবার জানায়, বর্ষা শুরু হওয়ার আগে তারা ঘরবাড়ি মেরামতের মতো অর্থ জোগাড় করতে পারেনি।

পাঞ্জাবের আরও বিভিন্ন জেলাতেও বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসে বিপর্যয় নেমে এসেছে। চাকওয়ালে ৪৫০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাতের ফলে অন্তত ৩২টি রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। খেওয়াল গ্রামের মতো অঞ্চলে বাড়িঘর ধসে একাধিক প্রাণহানি ঘটেছে, নিহতদের মধ্যে ছিলেন এক পিতা ও তার পুত্র। অনেক এলাকা এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহও এখনো স্বাভাবিক হয়নি।

বিপর্যয়ের পর উদ্ধার ও মেরামত কাজ জোরদার করা হয়েছে। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ঝিলাম, পিন্ড দাদন খান, কাল্লার কাহার ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় রাস্তাঘাট দ্রুত সচল করতে ভারী যন্ত্রপাতি মোতায়েন করা হয়েছে। রাওয়ালপিন্ডির কারোলি ধোক ব্রিজ এলাকায় বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট রাস্তা ধসের মেরামত শেষ হওয়ায় সেখানে যান চলাচল আবার শুরু হয়েছে।

প্রবল বৃষ্টিপাত, দুর্বল অবকাঠামো এবং পর্যাপ্ত প্রস্তুতির অভাবে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে এবারের বর্ষা মৌসুম। পরিস্থিতি সামাল দিতে তৎপর রয়েছে প্রশাসন, তবে দেশজুড়ে ক্ষয়ক্ষতির গভীরতা দিন দিন আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাকিস্তান নিয়ে আরও পড়ুন

ভারতের মুম্বাইয়ের পালি হিল থেকে দিল্লির রিলায়েন্স সেন্টার পর্যন্ত অন্তত আটটি শহরে অনিল আম্বানির রিলায়েন্স গ্রুপের প্রায় ৩ হাজার ৮৪ কোটি রুপির সম্পত্তি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) বাজেয়াপ্ত করেছে

৬ ঘণ্টা আগে

এই সহযোগিতার আওতায় চারটি কেন্দ্র বুশেহর অঞ্চলে এবং বাকি চারটি দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্মিত হবে, যার সুনির্দিষ্ট অবস্থান পরবর্তীতে সরকার ঘোষণা করবে

৭ ঘণ্টা আগে

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ নিশ্চিত করতে সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন

৭ ঘণ্টা আগে

ই মসজিদটি দেশটির অন্যতম সুন্দর স্থাপনার মধ্যে একটি। নীল মসজিদকে হযরত আলী (রাঃ)-এর কবর হিসেবে দাবি করা হলেও, ঐতিহাসিক দলিল অনুযায়ী হযরত আলীকে ইরাকের নাজাফে দাফন করা হয়েছিল

৭ ঘণ্টা আগে