ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভারতের টেস্ট ব্যর্থতা যেন নতুন বাস্তবতার চিত্র তুলে ধরল। গুয়াহাটি টেস্টে ৪০৮ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজয়ের ফলে দুই ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে গৌতম গম্ভীরের শিষ্যরা—২৫ বছর পর ঘরের মাটিতে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে এটি ভারতের প্রথম সিরিজ হার।

দুই টেস্টেই দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিন আক্রমণের সামনে ভারতীয় ব্যাটিং ছিল পুরোপুরি দিশেহারা। সাইমন হারমার একাই তুলে নেন ১৭ উইকেট, কেশব মহারাজের শিকার ৬টি। এর আগেও নিউজিল্যান্ড সিরিজে এজাজ প্যাটেল ও মিচেল স্যান্টনারের বিপক্ষে ভুগেছিল ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা।

ভারতের শীর্ষ ব্যাটসম্যানরা কেন স্পিনের বিপক্ষে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে—নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এর বিশ্লেষণ দিয়েছেন সাবেক অফস্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তাঁর মতে,

“আমাদের বর্তমান ব্যাটিং ইউনিট স্পিন খেলায় বিশ্বের সবচেয়ে দুর্বল ব্যাটিং লাইনআপগুলোর একটি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা হঠাৎ হয়নি, এর পেছনে কাঠামোগত কারণ রয়েছে।”

অশ্বিন বলেন, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিরপেক্ষ কিউরেটর ব্যবস্থায় পিচ প্রস্তুতির ওপর স্থানীয় নিয়ন্ত্রণ কমেছে। ফলে দেশের বিভিন্ন ভেন্যুতে স্পিনবান্ধব উইকেট তৈরি বন্ধ হয়েছে, এবং লক্ষ্য বদলে পেসসহায়ক উইকেটে বেশি খেলা হচ্ছে। তিনি মনে করেন, বিদেশে পারফরম্যান্স উন্নত হলেও এর প্রভাব পড়েছে ঘরের মাঠে স্পিন সামলানোর সক্ষমতায়।

প্রোটিয়াদের ব্যাটিং পদ্ধতিরও প্রশংসা করেন অশ্বিন। তিনি বলেন,

“স্পিন খেলা মানে শুধুই সুইপ–রিভার্স সুইপ নয়। সঠিক ডিফেন্স ধরে রেখে ধৈর্যের সঙ্গে রান তোলা—দক্ষিণ আফ্রিকা সেটাই করেছে। প্রতিটি সেশনে ৮০ রান করে তারা ৫০০-এর ওপর সংগ্রহ গড়েছে। এমনই ধৈর্য ও পরিকল্পনা ভারতের মাটিতে সফলতার চাবিকাঠি।”

টেস্ট সিরিজ শেষ হলেও ভারত–দক্ষিণ আফ্রিকা লড়াই চলবে ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি ফরম্যাটে। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু হবে রোববার রাঁচিতে, এরপর মুখোমুখি হবে পাঁচ ম্যাচের টি–টোয়েন্টিতে।